ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খেলাপির সময়সীমা ৬ মাস রাখার বিবেচনা হচ্ছে: গভর্নর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
খেলাপির সময়সীমা ৬ মাস রাখার বিবেচনা হচ্ছে: গভর্নর ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন

ঢাকা: ঋণ খেলাপির সময়সীমা তিন মাস থেকে থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করার বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ঢাকা চেম্বারের ব্যবসায়ীরা গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঋণ খেলাপির সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানালে তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ৩ মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার পর সব ধরনের ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণিকরণ করা হবে। বর্তমানে ছয় মাস মেয়াদোত্তীর্ণ থাকা ঋণ শ্রেণিকরণ করা হয়। ডিসিআই-এর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে তা ছয় মাসই রাখ হোক।

এ ব্যাপারে গভর্নর জানান, বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ইতিবাচক। রপ্তানি আয় ঊর্ধ্বমুখী এবং রিজার্ভ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সুফল শিগগিরই আমরা ভোগ করতে পারব। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করতে হবে উদ্যোক্তাদের।

সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী জুন-জুলাইতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা যায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরও হ্রাস করা সম্ভব হবে, বলেন গভর্নর।

তিনি বলেন, রমজান মাসে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কোনো ধরনের মার্জিন ছাড়াই এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, এ মুহূর্তে বাজারে ডলারের তেমন কোনো সংকট নেই। ডলারের মূল্য বেশ স্থিতিশীল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য নির্ধারণ করবে না। এটা নির্ধারিত হবে ডলারের আমদানি ও চাহিদার ভিত্তিতে।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এ ছাড়াও ভ্যাট এবং ট্যাক্স হার বাড়নোর সিদ্ধান্তে এই অবস্থা আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যয় ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সুদহার সহনীয় পর্যায়ে রাখলে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও হ্রাস পেতে পারে। সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের সুবিধা পেতে প্রায় ৩১টি ডকুমেন্ট দিতে হয়। এ কারণে তারা অনেক সময় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হন।

ব্যাংক ঋণের শ্রেণিকরণের সময়সীমা তিন মাস থেকে কমপক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস করার দাবি জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি। এছাড়াও দেশের বাইরে ব্যবসায়িক অফিস স্থাপনের বিদ্যমান কঠোর নীতিমালা কিছুটা শিথিল করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সাথে বেগবান হবে অর্থনীতি। তাছাড়া দেশের সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন তিনি।

এ সময় ডিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।