ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবৈধ মোটরসাইকেলে প্রতারিত ভোক্তা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
অবৈধ মোটরসাইকেলে প্রতারিত ভোক্তা মোটরসাইকেল

ঢাকা: প্রচলিত মডেল না হওয়ার অজুহাতে অবৈধভাবে আমদানি করা মোটরসাইকেল দাম কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে একটি চক্র। এই চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে বেশি দামে কেনার কিছুদিন পর সার্ভিসিং ও যন্ত্রাংশ কিনতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।

নামসর্বস্ব সাইনবোর্ড টানিয়ে এসব মোটরসাইকেল বিক্রি করা হলেও কোম্পানির সার্ভিস পয়েন্টে মিলছে না সেবা। কারণ বৈধ পরিবেশকদের আমদানি করা গাড়ির চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর মিলিয়ে দেখে তারপর সার্ভিস দেওয়া হয়।

প্রতারণার শিকার মোটরসাইকেল ক্রেতা সায়েম আলী জানান, কুমিল্লা শহরের শাফা মোটরস শোরুম থেকে ইয়ামাহার ব্র্যান্ডের একটি মোটরসাইকেল কেনেন। কিছুদিন চালানোর পর মোটরসাইকেলের সার্ভিসিং ও কিছু যন্ত্রাংশের জন্য বিক্রয়কারী শোরুমে যান।

শোরুম থেকে সায়েমকে ইয়ামাহার সার্ভিস সেন্টারের ঠিকানা দেওয়া হয়। কিন্ত সার্ভিস সেন্টার গাড়ির নম্বর ও অন্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জানায়-এটি অবৈধভাবে আমদানি করা হয়েছে।

সায়েম বলেন, এই মডেলের মোটরসাইকেল ইয়ামাহার পরিবেশকরা আমদানি না করায় বিষয়টি ধরা পড়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ অর্থবছরে মাত্র আড়াই লাখ করে মোটরসাইকেল আমদানি হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলারস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএএমএ) তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে বিক্রি করা মোটরসাইকেলের প্রায় ৮৬ শতাংশই আমদানি করা। দেশীয় দুটি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এবং রানারের দখলে রয়েছে ১৪ শতাংশ বাজার।

এ বিষয়ে বিএমএএমএ’র কোষাধ্যক্ষ ও টিভিএস মোটরসাইকেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব অপারেশন বিপ্লব কুমার রায় বলেন, বৈধ আমদানিকারকরা দেড়শ শতাংশের বেশি শুল্ক দিয়ে একটি মোটরসাইকেল আমদানি করে। অবৈধ আমদানিকারকরা কম মূল্য দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এতে প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তারা। এ ধরনের আমদানি বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে বর্ডার ও শুল্ক প্রক্রিয়াকরণের সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শক্তভাবে যাচাই-বাছাই করলে অবৈধভাবে মোটরসাইকেল আনতে পারবে না আমদানিকারকরা।   দেশের ভেতর অবৈধ মোটরসাইকেল পুলিশের কাছে ধরা পড়ছে। পরবর্তীতে নিলাম করে বৈধতা দেওয়ার যে প্রক্রিয়া রয়েছে সেটিও বাতিল করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিরপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শামসুল কবীর বলেন, সঠিক নিবন্ধন ছাড়া কোনো মোটরসাইকেল রাস্তায় চলা বেআইনি। এজন্য যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন করা হচ্ছে। আমদানি করা মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে চেসিস নম্বরসহ অন্য বিষয়গুলো চেক করা হয়। এতে অবৈধ আমদানিকারকরা ধরা পড়েন।

পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, অবৈধ মোটরসাইকেলের আমদানি গত কয়েক বছরে বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন থানায় এ ধরনের মোটরসাইকেল প্রচুর জব্দ করা হচ্ছে। অনেক সময় অনুমোদনের চেয়ে বেশি গতির মোটরসাইকেলও আনা হচ্ছে। পুলিশ এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বড় ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়:০৯৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭
এসই/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।