ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সোনালী ব্যাংক নিয়ে ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৭
সোনালী ব্যাংক নিয়ে ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি

ঢাকা: ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে দ্রুত টাকা আদায় ও লোকসানের বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্ট না হয়ে উল্টো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হিসাব সর্ম্পকিত সংসদীয় কমিটি।

সম্প্রতি জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সর্ম্পকিত কমিটির ১৪তম সভায় এই ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ও মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নুর-ই-আলম চৌধুরী।


 
বৈঠকে কমিটির সভাপতি ও সাতজন সদস্য ছাড়াও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং ব্যাংক অব বাহাওয়ালপুরকে অধিগ্রহণ করে সোনালী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৭ সালের ৩ জুন এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসাবে নিবন্ধিত হয়। যেসব স্থানে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা নেই সেখানে সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের সরকারি কোষাগারের দায়িত্ব পালন করে থাকে।
 
সোনালী ব্যাংকের ইতিহাসে ২০১২ সালের হলমার্ক কেলেঙ্কারি অন্যতম আলোচিত বিষয়। কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভির মাহমুদ সোনালী ব্যাংকের হোটেল রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা আত্মসা‍ৎ করেন। একই শাখা থেকে আরও ২৬টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ভুয়া এলসি করে অস্তিত্বহীন আরও ৪০টি কোম্পানি হাতিয়ে নেয় আরও ১ হাজার কোটি টাকা। এসব ঘটনার পর থেকে সোনালী ব্যাংকের ওপর আস্থা কমতে থাকে গ্রাহকের।
 
কমিটির সভাপতি নুর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, সোনালী ব্যাংকের ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে দ্রুত টাকা আদায়ে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা বাস্তব সম্মত নয়। ব্যাংকের লোকসানের বিষয়ে কমিটির কাছে পাঠানো তথ্যও অপর্যাপ্ত। গত তিন বছর ধরে যেসব শাখা লোকসান করছে তাদের কোনো তালিকা কেন করা হয়না তাও জানতে চান তিনি।
 
কমিটির সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, সোনালী ব্যাংক এখন একটি শুভঙ্করের ফাঁকি নামক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যে কারণে আমানতকারীরা এখন টাকা রাখতে ভরসা পাচ্ছেনা। তাই আমানত প্রবৃদ্ধি ঋণাত্বক অবস্থানে।
 
এছাড়াও তিনি সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও গণমাধ্যমে তাদের নাম ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।  
 
শেখ ফজলে ন‍ূর তাপস বলেন, ক্রমেই জনবল বাড়ানো হলেও সোনালী ব্যাংকের কর্ম পরিধি ও মান বাড়ছেনা।
 
সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের লোকসান ৪২৮ কোটি টাকা। খেলাপিঋণ ১০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায় হয়েছে ৫৯৭ কোট ৬৭ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩১ জুলাই শেষে লোকসানী শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৪ টিতে।
 
জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ২০১৭ সালকে সোনালী ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর ঘোষণা করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ আদায় জোরদার, নতুন করে খেলাপি রোধ, খেলাপি ঋণ কমানো, ঋণ অবলোপন সর্ম্পকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এসই/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।