দোকানি এবার কথা ধরলেন কেনো কি হয়েছে? ওই যে পাশের ভ্যানটি দেখছো, ওই সবজিওয়ালা আদার কেজি চেয়েছে ১’শ টাকা করে। আর মাত্র দশ গজ দূরে ৬০ টাকা বেড়ে গেলো।
দোকানি বললেন, ‘ওর পর্তা ওর কাছে, আমার পর্তা আমার কাছে। আপনি ওর কাছে থেকে নেন। আমার কাছে কেন এসেছেন। আর আমি চাইলেই কি আপনি ১’শ টাকা দিবেন! মানুষতো দরদাম করেই নেন। সে কারণে বেশি চেয়েছি। ’
ঘটনাটি শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে শান্তিনগর বাজারের। কিন্তু হরহামেশাই এমন ঘটনা ঘটছে রাজধানী জুড়ে। আগে ছিলো এক বাজারের সঙ্গে অন্য বাজারের বিশাল ফারাক। এখন এক দোকান থেকে আরেক দোকানের দরদামে মিলছে না। এমনকি একই দোকানে ভিন্ন ভিন্ন ক্রেতার জন্য ভিন্ন দর নেওয়া হচ্ছে। দোকানিরাও বেশ কৌশলে দাম হাকাচ্ছেন, মামা আপনার জন্য এই দর। অন্য মামা অর্থাৎ অন্য ক্রেতার জন্য ভিন্ন রেট।
কিন্তু বছর দু’য়েক আগেও অবস্থা এতোটা ভয়াবহ ছিলো না। তখন দোকানভেদে তারতম্য থাকলেও একই দোকানে ভিন্ন ভিন্ন ক্রেতার জন্য ভিন্ন দর নেওয়া হতো না। নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট দরেই বিক্রি করতো দোকানি।
ঢাকায় এখন পাশাপাশি বসা দোকানেও দরদামে অনেক পার্থক্য। দিনে দিনে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। দরদাম করে কেনা ছাড়া কোনো উপায় নেই। পাড়ার গলিতে ভ্যানের বিক্রেতাদের অবস্থা যাচ্ছে তাই। বাজারের দামের সঙ্গে কোনো মিল থাকে না। কখনও কখনও বাজারের থেকে দ্বিগুণ দাম হাতিয়ে নেয় বলে জানান ক্রেতা রহিম মিয়া।
রহিম মিয়ার সঙ্গে অন্যরাও সুর মেলান। তাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, মামা আপনার জন্য এই দাম বললেই যাচাই করে পণ্য নিতে হবে। না হলে রক্ষা নেই। আর তাতেও যে খুব বেশি সুবিধা হবে সে গ্যারান্টিও দিতে পারবে না কেউ।
বাজারগুলোতে পণ্যের দরদামের তালিকা প্রদর্শন করার কথা। অনেক বাজারেই সেই তালিকার হদিস মেলে না। কোথাও কোথাও তালিকা থাকলেও তা আপডেট করা হয় না। আবার আপডেট করা হলেও সেই দামে বেচা হয় না।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানিয়েছে, পণ্যের দামে কেউ যদি প্রতারিত হন তাহলে সরাসরি অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ করলে আদায় করা জরিমানার ২৫ শতাংশ পাবেন সংক্ষুব্ধ ভোক্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
এসআই/আরআর