ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বস্তি ফিরছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
স্বস্তি ফিরছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ডিএসই ভবন। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: পুঁজিবাজারের দীর্ঘ মন্দার কারণে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সঙ্কটে দিন কাটছিল। করোনার কারণে দীর্ঘ বন্ধের পর লেনদেন শুরু হলেও মে ও জুন মাসে সূচকের পতন অব্যাহত থাকে।

তবে শেয়ারের সার্কিট ব্রেকার ও বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপে ইতিবাচক ধারায় ফিরছে দেশের পুঁজিবাজার।

বাজারে ইতিবাচক ধারা ফিরতে শুরু করায় চরম সঙ্কটে থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। সঙ্কট কাটিয়ে স্বস্তি ফিরছে দেশের ব্রোকারেজ হাউজগুলো। একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের মালিক ও সংশ্লিষ্টরা বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে লেনদেনে মন্দাভাব অব্যাহত থাকে। এর সঙ্গে করোনা যুক্ত হলে লেনদেন তলানিতে গিয়ে ঠেকে। পতন থেকে রক্ষা পেতে দেড় মাস পুঁজিবাজারে বন্ধ থাকে। পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয় শূন্য। কিন্তু এর মধ্যেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েন মালিকেরা। তবে আগস্ট মাস থেকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। যার ধারাবাহিকতা বজায় আছে। বাজারে সুদিন ফিরছে এমন আশায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোও ব্যস্ত হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের পদচারণায়। এতে করে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে।

এ ব্যাপারে শহীদুল্লাহ সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে দেড় মাস পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। এতে করে চরম সঙ্কটে দিন কেটেছে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর। তবে বর্তমানে পুঁজিবাজার চাঙ্গা থাকায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে হাউজগুলোতে।

তিনি বলেন, টার্নওভার (এক হাজার কোটি টাকার উপরে) যদি এরকম থাকে, তাহলে সব হাউজই তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, করোনাকালেও কোন ব্রোকারেজ হাউজ তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই করেনি। হয়তো বেতন ঠিকমতো দিতে পারেনি, বকেয়া হয়েছে। এখন বাজার ভালো হওয়ায় অনেকেই সেগুলো ধীরে ধীরে পরিশোধ করে দিচ্ছেন।

শরীফ আনোয়ার বলেন, নতুন কমিশন আসার পর বাজার ইতিবাচক হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিএসইসি যে রোল প্লে করেছে আশা করি, এটি অব্যাহত থাকবে। আমরাও সিকিউরিটিজ হাউজের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দিয়েছি। আশা করি, সবাই বুঝে শুনে মার্জিন লোন দিলে বাজারে তারল্যের ঘাটতি হবে না এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে আগস্টের শুরু থেকে প্রতিদিনই ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়াচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে করোনাকালেও ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে ছাঁটাই নয় বরং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এব্যাপারে ডিএসইর পরিচালক ও শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারে আগের চেয়ে ভালো অবস্থা বিরাজ করছে। গত এপ্রিল ও মে মাস পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল। জুন-জুলাইতেও বাজার মন্দা ছিল। কিন্তু আগস্টে এসে বাজার ভালো হয়েছে। এখন লেনদেনের যে গতি রয়েছে এটি অব্যাহত থাকলে ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। ছাঁটাই নয় বরং ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে লোকবল লাগবে।

অপরদিকে দীর্ঘ এক দশক ধরে পুঁজিবাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছিল। তাই বর্তমানে সূচকের উত্থান বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও তারল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে। এ আস্থা ধরে রাখতে কমিশনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
এসএমএকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।