ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বড় শিল্প ব্যবসার তুলনায় এসএমইতে অর্থায়ন নিরাপদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২০
বড় শিল্প ব্যবসার তুলনায় এসএমইতে অর্থায়ন নিরাপদ

ঢাকা: বড় আকারের শিল্প ব্যবসার তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (এসএমই) ব্যবসায় ফাইনান্সিং বা অর্থায়ন করা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এসএমই খাতে অর্থায়নের মাধ্যমে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা যায় যা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে জাতীয় অর্থনীতিতে।

এসএমই ফাইনান্সিং এ সবাইকে আরও বেশি উৎসাহ দিয়ে এক ওয়েবিনারে এমনই তথ্য দেন বিশেষজ্ঞরা।  

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর, আইডিএলসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী আরিফ খান এবং পিআরআই এর পরিচালক ড. বজলুল হক খন্দকার।  

ওয়েবিনারে পিআরআই এবং আইডিএলসি এর যৌথ উদ্যোগে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ে পরিচালিত এক গবেষণা পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। আইডিএলসি এর মাধ্যমে ঋণ পাওয়া প্রায় আট শতাধিক ব্যবসা ও উদ্যোগ সম্পর্কে তথ্য নিয়ে এ গবেষণাপত্র তৈরি করা হয়। ২০১৯ সালের প্রেক্ষাপটে ‘কর্মসংস্থান তৈরিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ গবেষণা পরিচালিত হয়।  

ওয়েবিনারে আরিফ খান বলেন, শুরুর দিকে এবং এখনও এসএমই ফাইনান্সিংকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বড় ব্যবসাগুলোতে ব্যাংক থেকে যে লোন পাওয়া যায় সেখানে যে ক্ষতি হয় এসএমইতে তার থেকে অনেক কম ক্ষতি হয়। যেখানে ব্যাংকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ‘ব্যাড লোন’ হয়, ক্ষতি হয় সেখানে এসএমই ফাইনান্সিং এর হার মাত্র তিন শতাংশ। জাপান, জার্মানির মতো দেশে আমরা দেখেছি অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে। আমাদের দেশেও তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে ফাইনান্সিং করতে হবে। ব্যাংকের সুদের হার যেখানে প্রায় ১০ শতাংশ, নয় শতাংশের বেশি সেখানে এসএমই ফাইনান্সিং এ পাঁচ শতাংশের কম। আমাদের দেশের ম্যাক্রো ইকোনমি (অতি ক্ষুদ্র অর্থনীতি) এর সম্প্রসারণের হার গড়ে প্রায় সাত শতাংশ। এছাড়াও এসএমই খাত প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করে। যারা এমএমই গুলোতে কাজ করেন সেখানেও কর্মসংস্থান আবার তাদের নিয়ে যারা কাজ করেন যেমন আমাদের মতো প্রতিষ্ঠান যারা তাদের লোন দেই সেখানেও প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হয়।

গবেষণা পত্র উপস্থাপন করে ড. বজলুল হক খন্দকার বলেন, শিল্পখাতে এসএমই এর ভূমিকা প্রায় ২৫ শতাংশ, কর্মসংস্থানে ভূমিকা প্রায় ৯০ শতাংশ। কমপক্ষে পাঁচ জন থেকে সর্বোচ্চ ৯৯ জন কর্মী আছে এমন এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ৫০ শতাংশের মতো কর্মসংস্থান এর যোগান করে। এসএমই কে উৎসাহ দিয়ে শুধু ২০১৯ সালেই আইডিএলসি থেকে ১৩ হাজার ৯৩১টি উদ্যোগকে ফাইন্যান্সিং করা হয়েছে। এদের মধ্যে অতি ক্ষুদ্র ব্যবসা উদ্যোগই ৩০ শতাংশ আর ৭০ শতাংশ হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা উদ্যোগ। এসব ব্যবসা উদ্যোগগুলোতে যাত্রা শুরু থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০৫ দশমিক সাত শতাংশ পর্যন্ত কর্মসংস্থান বেড়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় কর্মসংস্থান বেড়েছে ১৪৬ শতাংশ পর্যন্ত।  

ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলো একসময় বড় ব্যবসায় পরিণত হয় উল্লেখ করে আহসান মনসুর বলেন, বড় ইন্ডাস্ট্রি ও ক্ষুদ্র ব্যবসার ওপর নির্ভর থাকে। এক ধরনের সম্পর্ক থাকে উভয়ের মধ্যে। অনেক বড় ব্যবসাগুলো ক্ষুদ্র ব্যবসা হিসেবে শুরু হয়েছিল। এসএমই কে ছোট বা ক্ষুদ্র চোখে দেখলে চলবে না। এসএমই রাই আগামী দিনের ব্যবসার বাহক।  

তবে এসএমই খাতে প্রযুক্তির সন্নিবেশ করার তাগিদ দেন এ অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, এসএমই খাতে প্রযুক্তির ছোয়া এখনো সেভাবে আসেনি। ফলে বড় ব্যবসার তুলনায় উৎপাদন কম। এদিকে এসএমই পিছিয়ে আছে। কিন্তু এসএমই থেকে গ্রামীণ অর্থনীতি থেকে শুরু করে পুরো জাতি উন্নত হতে পারবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২০
এসএইচএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।