ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ফাইনালের উত্তাপ ঢাবিতে

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
ফাইনালের উত্তাপ ঢাবিতে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): গেল মাসেই স্বাগতিক কাতার বনাম ইকুয়েডর ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠে ফুটবলের অন্যতম জাঁকজমকপূর্ণ আসর ‘ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২। দেখতে দেখতে ২৮ দিনের মাথায় ফাইনালের মহারণে অংশ নিচ্ছে ফুটবলের দুই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।



রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামবে এ দুই দল।  

বাংলাদেশে ফুটবল সমার্থকদের বড় অংশ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের নান্দনিক খেলার ভক্ত। দুই দলের সমার্থকদের মধ্যে কে সেরা এ নিয়ে বিতর্ক লেগেই থাকে। যদিও এবার হেক্সা মিশনে আসা ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করায় সাদা-নীলের সমর্থকরা আছেন ফুরফুরে মেজাজে। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম তারকা লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ ওঠুক প্রত্যাশা তাদের।

ফাইনালে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের শিরোপার লড়াইকে ঘিরে বরাবরের মতোই বিশ্বব্যাপী উন্মাদনায় মেতেছে ফুটবল ভক্তরা। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশেও। তবে এবার সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় পর্দায় হাজার হাজার দর্শকদের একসঙ্গে ম্যাচ উপভোগ করার। এর চিত্র বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোচিত হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল খেলার মাঠ, টিএসসির পায়রা চত্বর ও টিএসসি সংলগ্ন স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে। সন্ধ্যার পর পরই ছোট ছোট গ্রুপে খেলা দেখতে চলে আসেছেন দর্শকরা। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও আসছেন অনেকেই। বরাবরের মতোই আর্জেন্টিনা সমর্থক দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেছে মুহসিন হল খেলার মাঠ। টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে। সবখোনে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের পদচারণা থাকলেও ফ্রান্সের সমর্থক কম লক্ষ্য করা গেছে। তবে অনেক ব্রাজিল সমর্থক আজকে ফ্রান্সকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছেন।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আর্জেন্টিনা সমর্থক সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, একজন সমর্থক হিসেবে আর্জেন্টিনা দলের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল তার পুরোপুরি পূর্ণ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আর্জেন্টিনা খুবই ভালো পারফরমেন্স দেখিয়েছে। আশা করি আজকের খেলায় এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চ্যাম্পিয়ন হবে প্রিয় দল আর্জেন্টিনা।  

আরেক আর্জেন্টিনা সমর্থক বিবিএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিনের কথায় দৃঢ়তার চাপ। তিনি বলেন, এবার আমরা কাপ ছাড়া বাসাই যাচ্ছি না। নিঃসন্দেহে ফ্রান্স শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তবুও আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস শেষ হাসিটা আর্জেন্টিনায় হাসবে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার জন্য এইবারের বিশ্বকাপটা বিশেষ অর্থবহ। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত লিওনের মেসির শেষ বিশ্বকাপ এটি। ক্যারিয়ারে অনেক অর্জন সত্ত্বেও এখনো বিশ্বকাপ ছোঁয়া হয়নি মেসির। বিশ্বকাপ ছোঁয়ার এই শেষ সুযোগ নিঃসন্দেহে মিস করতে চাইবেন না মেসি এবং তার শিষ্যরা।  

তবে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ব্রাজিল সমর্থক ইখতিয়ার হাসানও চাচ্ছেন মেসির হাতেই উঠুক শিরোপা। তিনি বলেন, ২০০৬ বিশ্বকাপ এরপর হতেই ইউরোপীয়ান দেশগুলোর আধিপত্য অনেক বেড়ে গেছে। আমি চাই এটা কমুক এবং লাতিন আমেরিকার কোনো দেশের হাতে উঠুক বিশ্বসেরার মুকুট। এইবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ভালো খেলেছে। আশা করি তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে।

বড় পর্দায় খেলা দেখানোর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরের দর্শকদের আগমন ঘটেছে অনেক বেশি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ কারণে বেশ কয়েকটি ম্যাচ দেখানো বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ।

ফাইনাল ম্যাচ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, ক্রীড়া আমাদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের একটি অংশ। ছাত্ররা বড় পর্দায় খেলা দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে। যার সম্পর্কে আমরা অবহিত আছি। আমরা মনে করি এটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য। রাতের বেলা বাইরের দর্শক এলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। আমরা অনুরোধ করবো ঢাবির বাইরের দর্শকদের যেন স্ব স্ব অবস্থানে সামাজিক পরিবেশে থেকে ফাইনাল ম্যাচ উপভোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সমুন্নত ও নিরাপদ রাখতে সহযোতিা করে।

বাংলাদেশ সময় ২০৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এসকেবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।