ঢাকা: নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবইয়ে ভুল সংশোধনে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেছে কিনা তার তদন্ত করতে আরেকটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যবইয়ে নানা ভুল ও অসঙ্গতি নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে ‘নতুন শিক্ষাক্রম বিষয়ক’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি বছরে পাঠ্যবই একেবারে করে ফেলা দুরহ কাজ। এজন্য এ বছরটাও আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দিয়েছি। আমরা সারা বছর সবার মতামত নেব এবং পরিবর্তন ও পরিমার্জনের কাজটা চলবে। আমরা চেষ্টা করেছি যেন কোথাও কোনো ধর্মীয় বিদ্বেষ না থাকে, কোনো লিঙ্গ বৈষম্য না থাকে, ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার যেন কোনো বিদ্বেষ-বৈষম্য না থাকে সেজন্য আমরা সতর্কতা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি। আমি বলবো আমরা দুই মন্ত্রণালয় এবং সবাই পাঠ্যপুস্তক নিয়ে যে মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ তা অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে দেখছি।
তিনি বলেন, আমরা দুটি কমিটি তৈরি করেছি। একটি কমিটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। সেখানে স্বাস্থ্য, ধর্মীয়, পেশাগত বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। যে কেউ যেকোনো জায়গা থেকে যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করবে। এ কমিটি কোথাও ভুল থাকলে নিশ্চয়ই সংশোধন করা হবে। কারো কোনো অস্বস্তি থাকলে তা বিবেচনায় নেব। যেখানে ভুল থাকবে তা অবশ্যই সংশোধন করা হবে। কোথাও যদি কোনো কিছু নিয়ে আপত্তি তাকে, কোথাও যদি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আপত্তি থাকে সেগুলোকেও কিন্তু আমরা বিবেচনায় নেব।
দীপু মনি বলেন, আওয়ামী লীগ কখনই ধর্মবিরোধী বা ধর্ম বিদ্বেষী কোনো কিছু করেনি এবং এটি আমাদের ঘোষিত নীতির অংশ। আমরা কোরআন এবং সুন্নাহবিরোধী কোনো কিছু করবো না। এটি ৪৯ সাল থেকেই সত্য। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আগাত দেবার কোনো অধিকার যেমন আমাদের নেই, আমাদের কোনো ইচ্ছাও নেই।
তিনি বলেন, কিছু অভিযোগ এসেছে, কিছু আলোচনা আমরা দেখছি। হয়তো শস্যের মধ্যেও কোথাও ভূত আছে। যে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গেছি সেখানে অনেক মানুষ জড়িত। পাঠ্যবই তৈরির সঙ্গে জড়িত এনসিটিবির মধ্যে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু করে থাকলে তা তদন্ত করে দেখবে। কোথাও যদি কারো কোনো গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়, কোথাও যদি নেতিবাচক কোনো দিকে নিয়ে যাবার অপচেষ্টা ছিল- অবশ্যই আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
এনসিটিবির দোষীদের চিহ্নিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে যা দরকার পড়বে এবং এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরও হয়তো প্রতিনিধি থাকবেন বলে জানান দীপু মনি।
তিনি বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে কমিটি দুটির বিস্তারিত জানানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে যেসব ভুল পেয়েছি সেগুলো আমরা সংশোধন করে ওয়েবসাইটে দিয়েছি। এছাড়া পরে সংশোধনের সুযোগ আছে। আমি আশা করবো পাঠ্যপুস্তককে কেন্দ্র করে কোথাও কোনো অস্থিতিশীলতার কিছু ঘটানোর চেষ্টা না করা হয়। আমরা কথা দিতে পারি যে কোনো ধরনের পরামর্শ বিবেচনা করবো এবং ভুল থাকলে সংশোধন করবো। আর যাদের গাফিলতি তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২, আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা
এমআইএইচ/আরবি