খুলনা: সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে গ্রাজুয়েটদেরও পরিবর্তন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
কৃষিক্ষেত্রের বহুমুখী সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে সবার পারস্পারিক সহযোগিতায় তা অব্যাহত রাখতে হবে।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ক্যারিয়ার টক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, লেখাপড়ার মূল উদ্দেশ্য চাকরি হওয়া উচিত নয়। চাকরির পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে হবে। উদ্যোক্তা হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে হবে। বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রের বহুমুখী সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি প্রয়োজন।
এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন এবং ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘এগ্রোটেকনোলজি সিলভার জুবিলি-২০২৩’ নামে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাইরা দেশ ও বিদেশের নানা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। এতে তাদের জ্ঞানের পরিধিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের সুনামে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিন তথা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গর্ববোধ করছে।
তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় যে অধিক বরাদ্দ পাওয়া গেছে তার কৃতিত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য জোর দিয়েছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বিক বাজেট বরাদ্দও অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিকেন্দ্রিক। যার কারণে করোনা মহামারীসহ বৈশ্বিক নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনীতি সঠিক অবস্থানে রয়েছে। কৃষির গবেষণা এবং গবেষণা ফলের কারণে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রেখেছে। এজন্য দেশের কৃষক সমাজ ও কৃষিবিদদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টায় ২৯টি ডিসিপ্লিনেরই বিশ্বমানের ওবিই কারিকুলাম প্রণীত হয়েছে। যা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দৃষ্টান্ত।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন থেকে এবছর থেকে চালু হওয়া স্কলারশিপের জন্য মনোনীত চারজন শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করেন এবং তাদের অভিনন্দন জানান। একইসঙ্গে এমন উদ্যোগ গ্রহণ ও রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে স্মৃতিচারণ করেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. মতিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও অ্যালামনাইরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৯টায় রজতজয়ন্তী উপলক্ষে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন উপাচার্য। পরে তার নেতৃত্বে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের অধিকাংশ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, অ্যালামনাইরা অংশ নেন।
এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- স্পোর্টস, নতুন কমিটি গঠন, র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্যান্ড শো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
এমআরএম/এসএ