জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): তৃতীয়বারের মতো গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম এ মাসেই শুরু হবে।
এবছর শুরুতে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) দ্বিমত পোষণ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় জোরালো কোনো আওয়াজ তোলেনি কেউ।
এছাড়া গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর জন্য নতুন তিনটি পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদন করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইউজিসির অনুমতি না পাওয়ায় এবছর কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারছেন না ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত বছর ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা।
শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়ে চিন্তা করে গুচ্ছ কার্যক্রম শুরু হলেও এতে দেখা যায় নানা ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের।
এদিকে নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রাখতে জবি ও ইবির শিক্ষক সমিতি এ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার দাবি জানায়।
জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কারণে আমরা নিজেদের স্বকীয়তা হারাচ্ছি। কয়েকটা আসন পূরণের জন্য দশের বেশি মেধাতালিকা দেওয়া লাগে। মেধাবী শিক্ষার্থী হারাচ্ছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখনও আগের সিদ্ধান্তেই আছি। আমরা গুচ্ছতে যাবো না। বুধবার (১৫ মার্চ) একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং আছে, আমরা সেখানে আমাদের সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করবো।
তবে গুচ্ছতে জবি থাকবে কিনা এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
১৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে জানান একাধিক সূত্র।
ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের মিটিংয়ে আমরা সমস্যার কথা বলেছি। টেকনিক্যাল ত্রুটি ও অগোছালো বিষয়টি সমাধান করতে হবে। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফিরতে আমরা উপাচার্যের কাছে চিঠিও দিয়েছি।
গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসেই গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে এবং জুলাইয়ের শুরুতেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হবে। সব ত্রুটি চিহ্নিত করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চলবে। প্রয়োজনে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আরও সমৃদ্ধশালী করা হবে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেট জটিলতা ও অবকাঠামো হীনতার কারণে এবছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম শুরু হবে না বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সদস্য ড. দিলারা আফরোজা।
তিনি বলেন, গুচ্ছের সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা চলছে। কোনো জটিলতা ছাড়া একটি সুন্দর প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গুচ্ছ কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়াও এবার গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আবেদন জানিয়েছেন পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কাছে এ আবেদন জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির উপাচার্য। তবে ইউজিসি থেকে নতুন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এমআর/এএটি