কুবি: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।
ফলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কুবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অপূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনারেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে।
গত ৩ বছর ধরে নির্মাণ কাজ চললেও অর্থাভাবে তা বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ দিকে একটি টিলার উপরে নির্মাণাধীন শহীদ মিনার। এর মূল বেদীতে দুটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে স্তম্ভ দুটির কাজও শেষ করা হয়নি। বাকি রয়েছে বেদী ঘিরে মূল নকশার অবশিষ্ট কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে এ নির্মাণাধীন শহীদ মিনারে দুই স্তম্ভে কালো কাপড় পেঁচিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম মাওলা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পাশে টিলার ওপর মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী প্রস্তাবিত শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ওই স্থানকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নান্দনিক নকশা তৈরি করেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী অধ্যাপক ড. হাসেম খান। পরে শহিদ মিনারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমীর হোসেন খান ২০১১ সালে শহীদ মিনারের স্থান পরিবর্তন করেন বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের পাশের পাহাড়ে।
এরপর অর্থ সংকট, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বদিচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে এর নির্মাণ কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল কার্যালয় জানায়, ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি ফের শুরু করা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে চলে এ কাজ। তখন নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ৭০ লাখ টাকা।
একই বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কাজ বন্ধ করে দেয় শহীদ মিনার নির্মাণে টেন্ডার পাওয়া আর কে ইন্টারন্যাশনাল নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই বছর স্থগিত থাকার পর ২০১৩ সালে কিছু দিন চলে নির্মাণ কাজ।
পরে ২০১৩ সালের কয়েক মাস এবং ২০১৪ সালের পুরোটা সময় নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এ সময়ে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে ৪৫ লাখ ও ২০ লাখ টাকা কাজের টেন্ডার দেওয়া হয়। তাদের ২৪৫ কার্য দিবসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়। তবে এখনো নির্মাণের ৮০ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে বলে জানায় প্রকৌশল দপ্তর।
এছাড়া শহীদ মিনারের বেদী, মাটি কাটা, সৌন্দর্য বর্ধন ও সংলগ্ন রাস্তা নানা কাজ বাকি রয়েছে।
এ নিয়ে কথা হলে শহীদ মিনার নির্মাণে ধীর গতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. শাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরো একটু আন্তরিক হলে কাজ শেষ করতে পারতো। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে শহীদ মিনারের কাজ শেষ হোক চাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ বাংলানিউজকে বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।
এবার একটি সুন্দর শহীদ মিনার নির্মাণ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫