ঢাকা: নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষায় পাশ না করে, শুধু ক্লাসে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি দিয়েই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার নিশ্চয়তা থাকছে না। গত ৩ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করলেও তা আবার বাতিল করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রী ঢাকার বাইরে আছেন। বুধবারই (১১ মার্চ) ফেরার কথা। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) বা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই এ প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হবে।
গত ৩ মার্চ জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এখন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলেও চলবে।
এক্ষেত্রে অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের শুধু সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি থাকলেই চলবে।
শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এ নির্দেশনা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আর এ পরিপত্র জারির পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয় বলে সূত্র জানায়।
রাজধানীর একটি সেরা স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের যুক্তি অপরিণামদর্শী। যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করতেই এসএসসি পরীক্ষার আগে নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হয়।
‘শিক্ষার্থীরা যদি জানে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি থাকলেই পরীক্ষা দেওয়া যাবে, তবে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নেবে কেন? পরীক্ষাটি মূল্যহীন হয়ে পড়বে,’—যোগ করেন তিনি।
এ ধরনের সরকারি সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এই শিক্ষক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সমালোচনার বিষয়ে মন্ত্রণালয় অবগত আছে। শিগগিরই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবে। পরিপত্রে ভাষাগত ত্রুটির কারণে বিভিন্ন অর্থ বের করছেন অনেকে।
পরিপত্রে বলা হয়, কোনো কোনো বিদ্যালয় শতভাগ পাস কিংবা ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্যতার অজুহাতে পরীক্ষার্থী ছাঁটাই করা হয়।
অপর পক্ষে অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ঘটনা এবং বিভিন্ন অযাচিত ঘটনার জন্যও কিছু শিক্ষার্থী পাবলিক পরীক্ষার পূর্বে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।
উপরোক্ত অবস্থা নিরসনকল্পে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অনুত্তীর্ণ কিন্তু ৭০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত ছিল এমন শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় এবং মাদরাসা প্রধানগণকে নির্দেশনা দেয়া হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুধবার বিকেলে শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, পরিপত্র বাতিল করার যুক্তি দেখি না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মনে করলে, সেটি ভিন্ন বিষয়।
তিনি বলেন, কিছু বিদ্যালয় শতভাগ পাস দেখানোর জন্য নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার অজুহাতে পরীক্ষার্থী ছাঁটাই করে।
শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেখেন কী হয়। আমি কি বলবো!’
এর বেশি মন্তব্য করতে রাজি হননি শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৫