জানা যায়, সোমবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম শিফটে 'সি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওএমআর অমিলের অভিযোগ করেন।
পরে প্রশ্নপত্রে দেখা যায়- মোট ৬০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নে ১ থেকে ৩০ পর্যন্ত ইংরেজি, ৩১ থেকে ৪৫ পর্যন্ত ব্যবসায় শিক্ষা, ৪৬ থেকে ৬০ পর্যন্ত হিসাব বিজ্ঞান বিষয় ক্রমবিন্যাস করা। তবে ওএমআর শিটে প্রথমে ইংরেজি (১ থেকে ৩০) পরে হিসাব বিজ্ঞান (৩১ থেকে ৪৫) এবং ব্যবসায় শিক্ষা (৪৬ থেকে ৬০) বিষয়টি ক্রমবিন্যাস করা হয়।
এতে প্রশ্নপত্র এবং ওএমআর এর সঙ্গে অমিলের বিষয়টি উঠে আসে। তবে শিক্ষার্থীরা জানান প্রশ্নপত্রে ৩১ থেকে ৪৫ নম্বর এমসিকিউগুলোর ক্রমবিন্যাসে ব্যবসায় শিক্ষা থাকলেও মূলত এগুলো হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের।
অপরদিকে প্রশ্নপত্রে ৪৬ থেকে ৬০ নম্বর এমসিকিউগুলোর ক্রমবিন্যাস হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের দেয়া থাকলেও এগুলো মূলত ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের।
এছাড়াও ২০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওএমআর শিটেরও অমিল পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, ৬১ থেকে ৮০ নম্বর পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের ক্রমবিন্যাস করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা জানায় যে প্রশ্নপত্রে ৬১ থেকে ৮০ পর্যন্ত ক্রমবিন্যাস করা হলেও ওএমআর শিটে ক্রমবিন্যাস ১ থেকে ২০ পর্যন্ত করা হয়।
তবে পরীক্ষার কেন্দ্রে অসঙ্গতি দেখে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয় বলে জানান কক্ষ পরিদর্শকগণ।
তারা বলেন, ‘প্রশ্নে উল্লিখিত শিরোনামটা (ইংরেজি, ব্যবসায় শিক্ষা, হিসাব বিজ্ঞান) বাদ দিয়ে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত ক্রমানুসারে উত্তর দিতে। এছাড়াও প্রশ্নপত্রে লিখিত পরীক্ষার ক্রমবিন্যাস ৬১ থেকে ৮০ হলেও তা ওএমআর শিটে অনুযায়ী ১ থেকে ২০ ক্রমানুযায়ী উত্তর দিতে।
তারা আরো বলেন, যদি কোনো কক্ষে নির্দেশনা পৌঁছানোর আগেই শিক্ষার্থীরা উত্তর দিয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে প্রশাসন থেকে ওই কক্ষগুলো শনাক্ত করে রাখা হচ্ছে এ ব্যাপারে প্রশাসন পরে সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে বেশ কিছু কক্ষে এই নির্দেশনাটি দেওয়া হয়নি বলেও জানা গেছে। দিনাজপুর থেকে আসা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে পরীক্ষারত জসিম উদ্দীন নামে এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ওএমআর এর অমিল পাওয়ার পরও পরীক্ষার হলে কোনো দিক নির্দেশনা না থাকায় আমাদের বিড়ম্বনায় পরতে হয়েছে। উপায় না পেয়ে আগের নিয়মানুযায়ীই উত্তর দিতে হয়েছে। ফলে আমাদের ওএমআর বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। '
তবে অভিযোগ পাওয়া গেছে বেশকিছু পরীক্ষার হলে ওএমআর শিটে কাটাকাটি করে উত্তর দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রশ্নে ক্রমবিন্যাসে ভুল থাকার পরও ওমএমআর শিটে হিসাব বিজ্ঞানের পরিবর্তে ব্যবসায় শিক্ষা (৩১ থেকে ৪৫) এবং ব্যবসায় শিক্ষার পরিবর্তে হিসাব বিজ্ঞান (৪৬ থেকে ৬০) বিষয়টি সংশোধন করা হয়।
তবে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ছাড়া অন্য কোনো দাগ দিলে সে ওমএমআর বাতিল বলে গন্য করা হবে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ওএমআর বাতিল হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন বলে বাংলানিউজকে জানান।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ১৪০ নম্বর কক্ষে ৫ মিনিট ও ১২৫ নম্বর কক্ষে ৩০ মিনিট পর ওমওমআর শিট দেওয়া হয়। পরে ওই দুই রুমে শিক্ষার্থীদের ৫ মিনিট এবং ৩০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রশাসন থেকে একটা নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু পরিদর্শকগণ আমাদের নির্দেশনা যথাযথভাবে না মানায় কেন্দ্রে একটু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। যাতে কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি অবিচার করা না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
আরএ/