শনিবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সামনে পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক হাসনা হেনাকে মুক্তি না দিলে রোববার (৯ ডিসেম্বর) থেকে সব শ্রেণির ক্লাস বর্জন করা হবে।
এর আগে নব শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার মামলায় গত বুধবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরা থেকে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এই শ্রেণিশিক্ষক এখন কারাগারে রয়েছেন।
গত ৩ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে নিজেদের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে অরিত্রী অধিকারী (১৫)। অরিত্রীর বাবার ভাষ্যে, ২ ডিসেম্বর পরীক্ষা চলাকালে অরিত্রীর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ তার মা-বাবাকে স্কুলে ডেকে তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। তখন মা-বাবার সঙ্গে ‘অনভিপ্রেত আচরণ’ হয়েছে মনে করে স্কুল থেকে অরিত্রী বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় ‘আত্মহত্যার প্ররোচণাকারী’ হিসেবে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অরিত্রীর বাবা। আসামি তিনজন হলেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনা।
অরিত্রী ও তার অভিভাবকদের লাঞ্ছিত করার বিচার দাবিতে টানা কয়েকদিন ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে শিক্ষকদের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।
কিন্তু শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও সাবেক ছাত্রীদের ব্যানারে আরেকদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। শনিবারও বিক্ষোভ করে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয় তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা ইশরাফ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের শিক্ষক হাসনা হেনাকে মুক্তি না দিলে রোববার (৯ ডিসেম্বর) সব শ্রেণীর ক্লাস বর্জন করবো। বর্তমানে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বলেন, ঘটে যাওয়া এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক হাসনা হেনার কোনো দায় নেই। তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন পোস্টারে লেখা আছে- ‘হাসনা হেনা আপার মুক্তি চাই’, ‘জাতির কারিগর কেন কারাগারে’, ‘লিখতে শিখিয়েছে যে হাত, সে কেন খাবে জেলের ভাত’ ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
ইএআর/এইচএ/