সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীর ফলে দেখা যায়- এবছর উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে তিন লাখ ৬৮ হাজার ১৯৩ জন। গতবছর প্রাথমিকে জিপিএ-৫ পায় দুই লাখ ৬২ হাজার ৬০৯ জন শিক্ষার্থী।
হঠাৎ করে জিপিএ-৫ বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি পরীক্ষা ভালো দিয়েছে তারা। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের মনোযোগ আরো বেড়েছে এটা ধরে নিতে হবে, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকেরা আরো সচেতন হয়েছে এবং পরীক্ষাটাকে গুরুত্ব দিয়েছে তারা।
‘আর তাছাড়াও আগে যে এমসিকিউ..., অনেক সময় হয়তো আমরা মনে করতাম এমসিকিউটা বোধ হয় সহজ। এখন তো মনে হচ্ছে যে সাধারণ বই পড়ে এসে পরীক্ষা দিচ্ছে তারা। আমার মনে হয় বইয়ের ভেতরে ঢুকেছে তারা, ছাত্ররা। এটা একটা ভালো দিক বলে মনে করি। ’
শিক্ষার্থীদের বেসরকারি স্কুলের প্রতি আগ্রহের কারণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কিছু অভিভাবক এভারেজ স্ট্যান্ডার্ডের মধ্যে থাকতে চাচ্ছেন না। নাম শুনে মনে করছে এখানে (কিন্ডারগার্টেন)..., এখন তো পৃথিবীটা, আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা, কেমন করে আমার ছেলেটার অন্য দেশে যেতে পারবে। তার জন্য মনে করে কিন্ডারগার্টেনের শব্দটার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ আছে। সেখানে পড়ালে তাদের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে, ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে..., এটা মনে করছে হয়তো তারা।
‘আমি মনে করি কিন্ডারগার্টেনে যারা পড়ছেন, কোনটাকেই আলাদা করি না, সরকারি উদ্যোগে সব বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই কোটি, তার মধ্যে আমাদের প্রাইমারিতে এক-দেড় কোটি পড়ছে। এই যে ৫০ লাখ শিক্ষার্থী, মানুষের কিছুটা স্বচ্ছলতা বেড়েছে, কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা বেড়েছে। এখন গ্রামেও চলে গেছে। ’
সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি স্কুলগুলোর পাসের হার কিছুটা কম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কোন কারণে কোনটা, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে গড় হিসাবের ক্ষেত্রে কারা এগিয়ে বা পিছিয়ে সেটা রেজাল্টের পর পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী বলেন, জরাজীর্ণ স্কুল ২০১৮ সালের টেন্ডারের আওতায় নিয়েছি। কোনটাই বাদ যাবে না। ২০১৯ সালে নতুন প্রভাত। স্কুল বদলে দেবো অবকাঠামোগতভাবে, দৃষ্টিনন্দন স্কুলের দিকে চলে যাচ্ছি। এজন্য হিউজ অ্যামাউন্ট (টাকা) সরকার ব্যয় করছে। কোয়ালিটি এডুকেশন না হলে চলবে না। এজন্য এই ক্ষেত্রে যা যা করা দরকার তা করছে সরকার।
মন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে (সরকারি স্কুল) কেউ খেয়ে ফেলবে না। আমাদের পেটের মধ্যে ছোটখাট অনেক কিছু আছে। সবাই চলে আসবে। নকল নিয়ে একটা প্রশ্ন করেননি, সেটা আমার জন্য একটা বড় অগ্রগতি। এটা সবচেয়ে বড় বিব্রতকর।
মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি যার ফল এবার প্রমাণ পেয়েছি। ২০১৯ সালে আমাদের কাজ হবে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার ভিত্তি তৈরি করা। সেজন্য অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার হার্ডওয়ারের ক্ষেত্রে অনেক ডেভেলপ হয়েছে, এখন আমরা ক্লাস রুমকে টার্গেট করছি। সেখানে মূল টার্গেট হবে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী এবং মা। এই তিন টার্গেট নিয়ে প্রত্যেকটা ক্লাসরুমে আমরা পৌঁছানোর চেষ্টা করবো। ২০১৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবর্তন হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস