ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবির আন্দোলনের প্রভাব ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বাইরেও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৯
জাবির আন্দোলনের প্রভাব ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বাইরেও

সাভার (ঢাকা): জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলের পরিসীমা ছাড়িয়ে বাইরেও ছড়িযে পড়েছে। জনমনে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে৷ কখন কী হয়ে যায়, এ নিয়ে আতঙ্কে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা মানুষসহ আশে পাশের মানুষ।

জানা গেছে, সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তার বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরদিন মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে।

হামলায় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন। হামলার ঘটনার পর এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ও সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর পরই বন্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির এরিয়ার ভেতরে থাকা খাবার হোটেল, দোকান ও চলাচলের জন্য রিকশাও। শুধু তাই নয়, এ আন্দোলনের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ঘেঁষে বাইরে থাকা দোকান-পাট গুলোও প্রায় বন্ধ। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর এলাকা ঘেঁষে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাসের চাকলসহ সবার মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে জাহাঙ্গীরনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জাহাঙ্গীরনগরের মূলফটক (ডেইরি গেট), প্রান্তিক গেট ও বিশমাইল গেটের পাশে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘেঁষে থাকা ছোট বড় নানা রকম দোকানের বেশিরভাগই বন্ধ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা হাতেগোনা কয়েকটা দোকান খোলা থাকলেও বট তলার খাবার হোটেলগুলো পুরোপুরি বন্ধ।

আরও পড়ুনজাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের কনসার্ট

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় বাংলানিউজকে বলেন, ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে আমাদের কর্মসূচি চলবে। আমরা হল ছাড়ার নির্দেশ মানছি না। রাতে হলে থাকার জন্য আমরা যাব। আমাদের দুটি হলে পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা সব হোটেল ও দোকান বন্ধ। সকালে আবার সব হলে তালা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা হোটেল মালিক সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা শুরু হওয়ার পর থেকে ব্যবসা তেমন একটি নেই। যদিও মাঝখানে ব্যবসা ভালোই হয়েছে। তখন শিক্ষার্থীসহ বাইরের মানুষরাও আসতো। কিন্তু এখন সব হোটেল বন্ধ করে দেওযার পর আমরা বেকার।

জাহাঙ্গীরনগরের প্রান্তিক গেটের মুদি দোকানি আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ দিনগুলোতে ব্যবসা ভালো হলেও আন্দোলন শুরু হলেই আমাদের ব্যবসায় নামে ধস৷ আন্দোলন শুরু হলে এ দোকান বন্ধ দিতে হয়, আবার শেষ হলে দোকান খুলতে হয়। আমরাও বিপদে আছি গত কয়দিন যাবৎ, বেচা-কেনা একেবারেই নেই৷

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাস স্বজন পরিবহনের চালক সজিব বলেন, কিছুদিন পরপরই আন্দোলন লাগে জাহাঙ্গীরনগরে। যখনই আন্দোলন শুরু হয় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়৷ সেই সময় গাড়ি চালালে গাড়ি ভাঙচুরও হয়৷ তাই এ সড়কে গাড়ি চালাতে ভয় করে, কখন আবার সড়ক বন্ধ করে দেয়।

২৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন ১৮ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের অপসরণ দাবির আন্দোলনে রূপ নেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় ১০দিন উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ রাখার পর গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।