বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ এড়াতে সবধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিং সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কুয়েটের ৬৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই সিন্ডিকেট সভার কথা উল্লেখ করে কুয়েটের রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, রোববার থেকে পোস্টগ্র্যাজুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম ও ২৪ নভেম্বর থেকে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। এজন্য ২২ নভেম্বর সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। হলে প্রবেশের সময় সব কক্ষ তল্লাশি করবে হল কর্তৃপক্ষ। এজন্য সব শিক্ষার্থীকে হলে প্রবেশের সময় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। একইসঙ্গে সবধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিং সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বার্থে এবং শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ সমুন্নত রাখার জন্য ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কুয়েট রেজিস্ট্রার।
১ নভেম্বর বিকেলে আন্তঃহল ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রাতে কুয়েটের অমর একুশে হল ও ড. রশিদ হলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন। কুয়েটে আন্তঃহল ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ওইদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অমর একুশে হল ও ড. রশিদ হলের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এসময় রেফারির এক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে অমর একুশে হলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খেলা গোলশূন্য ড্র হলে অমর একুশে হলের সমর্থকরা রেফারি শাহ আলমের ওপর হামলা চালান। এসময় তার সহকর্মী আকবার এগিয়ে এলে তার ওপরও হামলা চালান অমর একুশে হলের সমর্থকরা। এসময় ফজলুল হক হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী রেফারিকে মারধরের ওই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। পরে অমর একুশে হলের ছাত্ররা ফজলুল হক হলের ছাত্রদের ভিডিও করতে বাধা দিলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ক্যাম্পাসের হলগুলোয় ছড়িয়ে পড়লে অমর একুশে হল ও ফজলুল হক হলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। রাতে দুই হলের মুখোমুখি অবস্থানে হল প্রভোস্টরা হলে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের হল ও পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির শৃঙ্খলার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব না দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, হল প্রভোস্টরা রাতে হলে না থাকায় হলের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এমআরএম/আরবি/