ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বর্ণিল সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের প্রাণের উচ্ছ্বাস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
বর্ণিল সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের প্রাণের উচ্ছ্বাস

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাবর্তন উপলক্ষে গ্র্যাজুয়েদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে মতিহারের সবুজ চত্বর। প্রাণের ক্যাম্পাসে জীবনটাকে একটু উপভোগ করতে শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটে এসেছেন তারা। রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলোকে মুহূর্তের জন্য ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত গ্র্যাজুয়েটরা। 

অনেকে আবার ক্যাম্পাসে এসেই নিজ বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করে ক্যাম্পাস ঘুরছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। ফলে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে মতিহারের এই সবুজ চত্বর।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।  

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এবারের সমাবর্তন বক্তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী।

সমাবর্তনে অংশ নিতে মোট ৩৪৩১ জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে কলা অনুষদের ৬৬৬ জন, আইন অনুষদের ৮৯, বিজ্ঞান অনুষদের ৩৭৭, বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদের ৫০৫, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৫৮১, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ৩১০, কৃষি অনুষদের ৮৫, প্রকৌশল অনুষদের ১৩৫ ও চারুকলা অনুষদের ৪৩ জন নিবন্ধন করেছেন। বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের ৬ জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করেছে। এছাড়াও, এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রির জন্য যথাক্রমে ৫১১ ও ১২৩ জন নিবন্ধিত হয়েছে।    

শনিবার (৩০ নভেম্বর) ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, গ্র্যাজুয়েটরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বসে হৈ-হুল্লোড় আর আড্ডায় মেতে আছেন। জোহা চত্বর, সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, পুরাতন ফোকলোর চত্বর, প্যারিস রোড, বদ্ধভূমি, শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসজুড়ে কেউ আড্ডা কেউবা বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে গান-বাজনা করছেন।

দীর্ঘদিন পর পুরনো বন্ধুদের পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন তারা। গল্প শুরু করেছেন ক্যাম্পাস মাতিয়ে তোলার সেই সোনালি দিনগুলোর স্মৃতি নিয়ে। কেউ কেউ সঙ্গে করে নিয়ে আসা পরিবারকে নিজের বিদ্যাপীঠটি ঘুরিয়ে দেখাতে ব্যস্ত। এই ক্যাম্পাসের সঙ্গে তাদের অনেক স্মৃতি জড়ানো। তাই তাদের সেই স্মৃতি ও অভিজ্ঞতাগুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন ক্যাম্পাসের নতুন মুখদের সঙ্গে। আর এ নতুন ও পুরাতন শিক্ষার্থীদের আড্ডায় যেন আনন্দের জোয়ার ভেসে বেড়াচ্ছে।

গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ক্যাম্পাসে এসে এত আনন্দ হচ্ছে যা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। দূরে থাকলেও ক্যাম্পাসকে আগের মতোই ভালোবাসেন তারা। ক্যাম্পাসে কাটানো সময়, আড্ডা-গল্প, ক্যাম্পাস চষে বেড়ানো এসব আর ফিরে আসবে না। তারপরেও ক্ষণিকের জন্য অতীতকে বর্তমানে ফিরে পেতে আগ্রহ-উদ্যোমের কমতি নেই  গ্র্যাজুয়েটদের। তাদের চোখে-মুখে যেন পুরনো দিনগুলোকে ফিরে পাওয়ার ভাবনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে কয়েকজন গ্র্যাজুয়েটকে দেখা গেল গাউন পড়ে ছবি তুলতে। তাদের একজন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাইল রহমান বলেন, শিক্ষার্থী হিসেবে অনুভূতি আর এখনকার অনুভূতি একদমই আলাদা। দীর্ঘদিন পর বিভাগের শিক্ষক, সহপাঠী, বিভাগের জুনিয়দের দেখে খুবই আনন্দ হচ্ছে। একবারও মনে হচ্ছে না আমরা এখান থেকে চলে গিয়েছি।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মুকুল উজ্জ্বল বলেন, ক্যাম্পাসে কাটানো দীর্ঘ পাঁচ বছর কিভাবে কেটে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি। ক্যাম্পাসের স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ে। প্যারিস রোডকে খুব মিস করি। যখন বিভাগ থেকে গাউন নিচ্ছিলাম তখন নিজেকে শিক্ষার্থী বলেই মনে হয়েছে। ক্যাম্পাস আগের চেয়ে অনেক সুন্দর এখন।

বিভাগের সাবেকদের পেয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীরাও অনেক আনন্দিত। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জমির উদ্দিন বলেন, বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা সবসময়ই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। সমাবর্তন উপলক্ষে আমরা সাবেকদের কাছে পেয়েছি। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।