ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষায় বরাদ্দে পিছিয়ে বাংলাদেশ

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২০
শিক্ষায় বরাদ্দে পিছিয়ে বাংলাদেশ

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিকী পরিকল্পনায় শিক্ষা খাতে মোট জাতীয় উৎপাদনের ২ দশমিক ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। 
 

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, শিক্ষায় সরকারি বরাদ্দের হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ।  

ভুটান ৬ দশমিক ৬ শতাংশ (২০১৮), নেপাল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ (২০১৮),  আফগানিস্তান ৪ দশমিক ১ শতাংশ (২০১৭), মালদ্বীপ ৪ দশমিক ১ শতাংশ (২০১৬), ভারত ৩ দশমিক ০ শতাংশ (২০১৯), পাকিস্তান ২ দশমিক ৯ শতাংশ ( ২০১৭), শ্রীলঙ্কা ২ দশমিক ৮ শতাংশ (২০১৭) শিক্ষায় বিনিয়োগ করে।

 

২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ এ খাতে বিনিয়োগের জন্য বরাদ্দ করেছে ২ দশমিক শুন্য ৯ শতাংশ।

জিডিপির অনুপাতে শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ পয়েন্ট।

তবে পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম বলছেন, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমেনি। তিনি বলেন, এ খাতের বাজেটের সঙ্গে সামরিক শিক্ষার বাজেট যোগ করলে ব্যয়ের পরিমান আরও বেশি হবে। এছাড়া বেসরকারি খাতের শিক্ষা ব্যয়ও রয়েছে। শিক্ষা খাতের বরাদ্দ ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।  

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে ৮৫ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতের ১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে ১৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকার বরাদ্দও রয়েছে। মোট বাজেট থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ বাদ দিলে শিক্ষায় বরাদ্দের পরিমান দাড়ায় ৬৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা।

শিক্ষায় খাতওয়ারী বরাদ্দে দেখা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায় ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ রয়েছে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। একবছরের ব্যবধানে বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে দশমিক শুন্য ১ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ৩১ লাখ ৭১ হাজার ৮শ কোটি টাকা। জিডিপির অনুপাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দের পরিমান ২ দশমিক শুন্য ৯ শতাংশ। অথব চলতি অর্থবছরেই জিডিপির অনুপাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২ দশমিক ১২ শতাংশ। সেই হিসাবে জিডিপির অনুপাতে শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে দশমিক শুন্য ৩ শতাংশ। অথচ সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা বরাদ্দ দেওয়ার কথা জিডিরি ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষায় অর্জনগুলো ধরে রাখা এবং করোনা পরর্বতী ঝুঁকি প্রশমনের জন্য বরাদ্দ একদম অপ্রতুল। এই বাজেট সংশোধন করতেই হবে। যদি আমরা মানব সক্ষমতা বিনির্মাণে বিনিয়োগ করি, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে এগিয়ে যেতে চাই, তাহলে এর কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২০
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।