ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

‘দেখিয়ে দিয়েছি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৩
‘দেখিয়ে দিয়েছি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব’

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, বিএনপি তো ডে ওয়ান থেকেই আমাদের মানছে না। তারা ভোটে অংশ নিয়ে বলুক নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না।

রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। দলীয় সরকারের সময়ই রংপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করেছি। দেখিয়ে দিয়েছি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

রোববার (০১ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আনিছুর রহমান বলেন, আমরা আগেও বলেছি গত সপ্তাহেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কাউকে ভোটে আনার দায়িত্ব আমাদের না। কোনো দল বা কাউকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব নয়। আমরা আহ্বান জানিয়েছি, আশা করছি তারা আসবে। নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করবো। কাজেই কেউ যদি না আসে তাদের আনার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা সেই কাজ করবোও না। তাদের কাজ তারা করবেন। আমরা আমাদের কাজ করবো। আমরা চেষ্টা করে যাবো বলবো যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আশা করছি যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মুখোমুখিই থাকে। আবার সমঝোতাও হয়। শেষ কথা বলতে কিছু নেই।  

এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই সেটা আপনারাই বলতে পারবেন। আমরা তো চেষ্টা করছি। দায়িত্ব নেওয়া পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে যেখানে অনিয়ম হয়েছে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। গাইবান্ধায় ভোট বন্ধ করে দিয়েছি, দু'দিন পর পুনরায় নির্বাচন হবে। আমাদের প্রচেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। এখন গ্রহণযোগ্যতা, অযোগ্যতা যেটাই হোক; আমরা তো আমাদেরটা বিবেচনা করতে পারবো না। পাবলিক পারসেপশন যদি হয় অগ্রহণযোগ্য সেটা খুঁজে দেখতে হবে।

তিনি বলেন, দলগুলো নির্বাচন আসবে এটাই কাম্য। তারা আমাদের অধীনে একটা নির্বাচনেও অংশ নেইনি। অংশ নিয়ে বলুক যে ভোট সুষ্ঠু হয়নি। তারা ডে ওয়ান থেকেই তো আমাদের মানছে না। আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়াই নাকি স্বচ্ছ হয়নি। আইনের আওতায় প্রথম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারপরও বলা হচ্ছে আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হয়নি। আমাদের তো কিছু করার নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বলি নাই যে ইসির প্রতি অনাস্থা নেই বা ছিল না। কিন্তু যারা বলছেন তারা তো আমাদের প্রথম থেকেই বলছেন। যদি একটা নির্বাচনেও অংশ নিতো তাহলে তো বলতে পারবো আমরা প্রতিশ্রুতি রাখতে পারিনি। তাহলে না আস্থা, অনাস্থার বিষয়টি বলতে পারতো। যারা অংশ নিয়েছে তারা তো বলেনি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।

বিএনপি আবারো বর্জন করলে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, এখনো ভোটের অনেক সময় আছে। অংশ না নিলে তখন বলা যাবে। এতো আগ বাড়িয়ে বলার সুযোগ নেই। আমাদের কাজ আর নেই। আমরা ওইভাবে হয়তো আর বসবো না। আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই সংলাপের।

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংসদ নির্বাচন করবো। আমরা আশাকরি যে, আইন সংশোধনের বিষয়টিও আইন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কয়েকদিনের মধ্যে চলে আসবে। আইনমন্ত্রী বলেছেন যে, কাজটা প্রায় শেষের পথে কয়েকদিনের মধ্যেই পাঠিয়ে দেবো। এক্ষেত্রে আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যেই আইন সংশোধনের কাজ শেষ করতে পারবো।  

তিনি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজটা আশাকরি জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবো। মে মাসের মধ্যেই যাতে করতে পারি সে চেষ্টা থাকবে। জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য পরিসংখ্যান ব্যুরোকে চিঠি লিখেছি। তারা যদি ওটা জুনের পরে করে তাহলে তো সেটা আমলে নেওয়া যাবো না। এক্ষেত্রে বর্তমানে যে অবস্থা আছে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। খুব বেশি আসনের প্রস্তাব আমরা পাইনি। সেগুলোর ওপর কাজ শুরু করেছি। এছাড়া ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এটার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। এরপর ভোটকেন্দ্র কাজে হাত দেবো। সীমানা পুর্নির্নিধারণ হলে আগস্টের মধ্যে ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হবে। তবে চূড়ান্ত করতে হয়তো নভেম্বর পর্যন্ত লেগে যাবে।

তিনি আরও বলেন, নতুন দল নিবন্ধন প্রক্রিয়াও জুনের মধ্যে করে ফেলবো বলে আশাকরি। কাজের সময়ের সঙ্গে হাঁটলে আর আমাদের হবে না, দৌড়াতে হবে। আমরা প্রতিদিনই অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করি। এছাড়া ভোটের প্রশিক্ষণ চলছে, চলবে। রোডম্যাপে আমরা পিছিয়ে নেই। সবকিছু সময় অনুযায়ী হচ্ছে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, ইভিএমের নতুন প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে আছে। আর সরকার থেকে ১৩ জন জনবলের অনুমোদন দিয়েছে। এখন ১৩ জন জনবল দিয়ে কিন্তু চালানো যাবে না। অর্থ বিভাগকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বলেছি। এখন যাই হোক ইভিএম প্রকল্প দ্রুত পাস হওয়া উচিত। যদি ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প পাস না হয় এবং তারপরে যদি আমাদের পক্ষেই অনুমোদন হয় তাহলে খুবই ডিফিকাল্ট হবে। বিএমএফ বলেছে এরপর হলে ইভিএম সাপ্লাই দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। কেননা, এলসি হবে বিদেশ থেকে মালামাল আসবে। এসব নানা কর্মযজ্ঞ রয়েছে। আমরা ইভিএম নতুন প্রকল্প না হলে হাতে যা আছে তা দিয়ে যতটুকু করার সম্ভব, ততটুকু করবো। বাকি আসনে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২৩
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।