বরিশাল: আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মাঠে মেয়র-কাউন্সিলর মিলিয়ে ১৬৮ জন প্রার্থীর সবাই ব্যস্ত রয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইতে।
ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নগরজুড়ে প্রার্থীরা নানানভাবে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন।
বিশেষ করে বরিশাল নগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চিত্রসাংবাদিক মো. রেদওয়ান রানা ও তার বড় ভাই সুমন আহম্মেদের স্ত্রী ফাতেমা রোজী এ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
তবে তাদের নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে না। রেদওয়ান রানা ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ আসনে অন্য ৩ প্রার্থীর সঙ্গে এবং সংরক্ষিত ১০ নম্বর (২৮,২৯,৩০) নম্বর ওয়ার্ডে ফাতেমা রোজী অন্য এক নারী প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এদিকে নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মারুফ আহম্মেদ জিয়া ও তার বড় বোন আয়শা তৌহিদা লুনাও সিটি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। এখানে তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।
মারুফ আহম্মেদ জিয়া ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ আসনে অন্য তিন প্রার্থীর সঙ্গে এবং বড় বোন আয়শা তৌহিদা লুনা সংরক্ষিত ৪ নম্বর (১০,১১,১২) ওয়ার্ডে অন্য ৩ নারী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই চার পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ প্রার্থীর ওয়ার্ড ঘুরে জানা গেছে, বিষয়টি একেকজন একেকভাবে নিচ্ছেন। তবে অনেকেই বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন।
২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ পরান সড়কের ব্যবসায়ী আতাউল্লাহ বলেন, দেবর-ভাবি দুজনেই মানুষের সেবা করতে চান। আর দুজনকে যদি ভোট দিয়ে বিজয়ী করা হয়, তাহলে নাগরিক সেবাটাও এক বাড়িতে এসেই যে কেউ নিতে পারবেন। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গাতে যেতে হবে না তখন।
অপরদিকে একই এলাকার ভোটার ফাতেমা আক্তার মনি বলেন, ফাতেমা রোজী ভাবি তো অনেক আগে থেকেই এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন। তিনি মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। আবার তার দেবর ঘুড়ি প্রতীকের রেদওয়ানা রানাও স্থানীয়দের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। সেই হিসেবে দুজনেই স্থানীয়দের কাছে পরিচিত, বিজয়ী হলে মানুষের সেবাই করবেন তারা।
এদিকে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ সাজমী বলেন, এখানে ভাই-বোনের বিষয়টিকে মুখ্য করে কেউ দেখছে না। সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর আয়শা তৌহিদা লুনা অনেক আগে থেকেই ১০,১১,১২ নম্বরে ওয়ার্ডের মানুষদের কাছে পরীক্ষিত। তিনি মানুষের পাশে সবসময় থাকেন বলে একাধিকবার তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। আর তার ছোট ভাই মারুফ আহম্মেদ জিয়াও মানুষের পাশে থাকেন। একই পরিবারের হওয়ায় আয়শা তৌহিদা লুনা ওপর যেমন মানুষের আস্থা রয়েছে, তেমনি মারুফ
আহম্মেদ জিয়ার ওপর থাকাটাও স্বাভাবিক।
কাউন্সিলর আয়শা তৌহিদা লুনা বলেন, আমি দীর্ঘ বছর ধরে সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি, ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। মধ্যরাত হোক আর ভোর হোক ওয়ার্ডবাসীর যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখনই আমাকে পেয়েছে। এ কারণে তারাও একাধিকবার আমাকে বিজয়ী করেছে। এবারে বিজয়ী হলে সড়ক সংস্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করব।
তিনি বলেন, আমার ছোট ভাইও মানুষের সেবায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়োজিত রেখেছে। সে যদি বিজয়ী তাহলে দুই ভাই-বোন মিলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করব, মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করব।
অপরদিকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রেদওয়ান রানা বলেন, আমি সাধারণ ওয়ার্ড থেকে আর ভাবি সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যেই বিজয়ী হই না কেন মানুষের কল্যাণে কাজ করব। কারণ নির্বাচন ছাড়াই আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সাধ্যমতো মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে আসছি।
আর তার ভাবি ফাতেমা রোজী নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রেদওয়ান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ