ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

খুলনা ও বরিশাল সিটিতে ভোটগ্রহণ চলছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
খুলনা ও বরিশাল সিটিতে ভোটগ্রহণ চলছে চলছে ইভিএমে ভোট। বরিশালের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ছবিটি তুলেছেন মুশফিক সৌরভ

ঢাকা: খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে, ভোটগ্রহণ উপলক্ষে মাঠে মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। কেন্দ্র পাহারায় মোতায়েন করা হয়েছে ১৬ থেকে ১৭ জনের ফোর্স। মাঠে নির্বাচনী আচরণ প্রতিপালনে নিয়োজিত করা হয়েছে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।  

এছাড়া রয়েছে ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক টিমও। নির্বাচন ভবনে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। এখানে বসেই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে স্থাপিত সিসি ক্যামেরায় ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করছেন নির্বাচন কমিশনাররাও।

খুলনা সিটিতে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ।  ছবি: মাহবুবুর রহমান মুন্না 

খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির (জাপা) শফিকুল ইসলাম মধু লাঙ্গল প্রতীকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুল আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে ও জাকের পার্টির এসএম সাব্বির হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া টেবিল ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিকও ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন।

আর কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। দু’জন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে ২৮৯টি কেন্দ্রের এক হাজার ৭৩২টি কেন্দ্রে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৪৩ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।

এছাড়া সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করতে দায়িত্ব পালন করছেন ১০ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ১১ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব ১৬টি টিম, পুলিশ-এপিবিএন-ব্যাটালিয়ন আনসারে ৪৯টি টিম।

বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু, টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন, হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান ও হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলী হোসেন হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কাউন্সিলর পদে ভোটের মাঠে রয়েছে ১৫৮ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ১১৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৪২ জন। নির্বাচনে দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। মোট ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।

এ নির্বাচনী এলাকায় ৩০ জন নির্বাহী ও ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। তারা নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন ও বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন।

ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে ১০ প্লাটুন বিজিবি, তিন সেকশন কোস্টগার্ড, র‌্যাবের ১৬টি টিম, পুলিশ-এপিবিএন-ব্যাটালিয়ান আনসারের ৪৩টি টিম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা ভোটের দুই দিন পর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

অন্যদিকে নির্বাচন উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে মোটরসাইকেল। ভোটের দিনের জন্য সীমিত থাকছে যন্ত্রচালিত যান চলাচল। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সব ধরনের মিছিলের ওপরও। সবার ভোট দেওয়ার সুবিধার্থে ভোটের এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে। অনিয়মের সঙ্গে কেউ জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে অতীতের চেয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে তার কমিশন।

তিনি বলেন, তফশিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে বিধি-বিধান প্রতিপালনে আমাদের অবস্থান কঠোর ছিল, খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই আমরা সুতীক্ষ্ণ নজর রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।

নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমাদের নির্দেশনা প্রশাসন, পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা শতভাগ পালনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আমাদের বার্তা স্পষ্ট ছিল, আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছি এবং নির্বাচন প্রচারণায় অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলা করলে কোনো ধরনের ছাড় দেই নাই।

এদিকে সোমবার কক্সবাজার পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কক্সবাজার পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মো. মাহাবুবার রহমান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জাহেদুর রহমান হাতপাখা প্রতীকে, স্বতন্ত্র থেকে হেলমেট প্রতীকে জগদীশ বড়ুয়া, মোবাইলফোন প্রতীকে জোসনা হক, নারকেল গাছ প্রতীকে মাসেদুল হক রাশেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে রয়েছে ৬৪ জন প্রার্থী।

আড়াইহাজার পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মো. সুন্দর আলী নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র থেকে জগ প্রতীকে মো. হাবিবুর রহমান, মোবাইল ফোন প্রতীকে মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ ও নারিকেল গাছ প্রতীকে মো. মেহের আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে রয়েছে ৪৫ প্রার্থী।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
ইইউডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।