ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নভেম্বরে চালু হবে নির্বাচনী অ্যাপ, ঘরে বসেই জমা দেওয়া যাবে মনোনয়ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৩
নভেম্বরে চালু হবে নির্বাচনী অ্যাপ, ঘরে বসেই জমা দেওয়া যাবে মনোনয়ন

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, আগামী নভেম্বরেই চালু হবে নির্বাচনী অ্যাপ। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা, ভোটার হার, ভোটকেন্দ্র ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে।

বুধবার (৯ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, আইন অনুযায়ী অফলাইন, অনলাইন দুভাবেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। শুধু অনলাইন রাখতে গেলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করতে হবে। টোটালি অনলাইন এখন আমরা চাইলেও হবে না। আমরা চিন্তা করছিলাম সব নির্বাচনের জন্যই যাতে এটা প্রযোজ্য করা যায়। এটা বাধ্যতামূলক করার সুযোগ নাই। কারণ আইনে সংশোধন আনতে হবে। তাই বাধ্যতামূলক আমরা যাচ্ছি না। অনলাইনে মনোনয়নপত্র দেওয়ার সুযোগটা এজন্য করা হয়েছে যাতে কেউ কোনো বাধার সম্মুখীন না হয়। আমরা অনলাইনে জমা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করব। কেননা, ঘরে বসেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।

নির্বাচনি অ্যাপসে আর কী থাকবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত টোটাল ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হবে ওটা। নমিনেশন সাবমিট করা যাবে, এনআইডি নম্বর দিলে অনেক বিষয় অটোপূরণ হয়ে যাবে। ডকুমেন্ট স্ক্যান করে দিতে হবে।

নির্বাচনি কেন্দ্রগুলোর নামের তালিকা, ছবি থাকবে। কে কোথায় কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবে। এনআইডি নম্বর দিয়ে অ্যাপসে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এতে গুগল ম্যাপেও ভোটার তার ভোটকেন্দ্র দেখতে পারবে।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা থাকবে। দুই ঘণ্টার অন্তর অন্তর ভোট পড়ার হার জানানো হবে। ১০টা, ১২টা, ২ট ও বিকেল ৪টায় আপডেট থাকবে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ফলাফল আমরা অ্যাপসে কেন্দ্রভিত্তিক দেখতে পারব। বেসরকারি ফলাফলটাও দেখা যাবে।

মো. আনিছুর রহমান বলেন, অ্যাপসের ফলে নির্বাচনে সহিংসতা বা শক্তি প্রদর্শন কমে আসবে। ভোটাররাও সহজেই কেন্দ্র সম্পর্কে জানতে পারবে। প্রার্থীও কত ভোট পড়েছে তাও জানতে পারবে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা ম্যানুয়ালি করতে হয়, এতে অনেক সময়ের ব্যয় হয়। এটা কমে আসবে।

ইসি আনিছুর রহমান বলেন, এই নির্বাচনের পরে যেন আরেকটি নির্বাচনেও এই অ্যাপস ব্যবহার করা যায়, আমরা এজন্য ছয় বছর মেয়াদি এই উদ্যোগটি নিচ্ছি। পরবর্তী কমিশন এসে কী করবে তারা সিদ্ধান্ত নেবে, কেননা, এতে অর্থ ব্যয়ের বিষয় আছে। সকল নির্বাচনেই আমরা এই অ্যাপসটি ব্যবহার করব। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এটির কার্যক্রম শুরু হবে। নভেম্বরে এটা আমরা চালু করব।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা হার্ডওয়্যারের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছি। আর সফটওয়্যাট যারা দেবে তাদের সঙ্গে আমাদের ছয় বছরের চুক্তি থাকবে। ইসির যে ডাটাবেজ আছে সেখান থেকেই মূল তথ্যগুলো এই অ্যাপে আসবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, যেহেতু পেপার ব্যালটে ভোট নেব, সেখানে দ্বিতীয়বার যাতে কেউ ভোট দিতে না পারে, সেজন্য দুর্গম বা যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ না হলে সকল জায়গায় আমরা সকালে ব্যালট পেপার পাঠাব। ভোটারকে হয়তো এনআইডি বা ভোটার নম্বর নিয়ে যেতে হবে। তাকে শনাক্ত করবে প্রার্থীর এজেন্টরা। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা কিন্তু তাদের চিনবে না, জানবে না। ভোটটা যাতে সুন্দর হয় আমরা সে ব্যবস্থা নেব।

ব্যালটের নিরাপত্তার জন্য কী করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ইচ্ছা থাকবে সকাল বেলা ব্যালট পেপার পাঠাব। যে সব জায়গায় চরাঞ্চল, দুর্গম এলাকা সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আগেই ব্যালট পাঠানো হবে। যেমন মরপুরা, সন্দ্বীপে সকাল পাঠানো সম্ভব না। ব্যালট তো জেলা জেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আগেই চলে যাবে। সেখান থেকে ভোটের দিন সকালে ভোটকেন্দ্রে যাবে। ব্যালটের নিরাপত্তার জন্য, ব্যালট যাতে মিসইউজ না হয়, সেজন্য সকালে পাঠানো হবে। জেলায় ট্রেজারিতে থাকে ব্যালট। উপজেলায় গেলে থানায় রাখা হয়। যেভাবে অতীতেও নিরাপত্তা ছিল এবারও থাকবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আশা করছি নভেম্বরের মধ্যেই আমরা অ্যাপসটা কমপ্লিট করে ফেলব। কেন নভেম্বরের করবেন- এই প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার আরো বলেন, যেহেতু ওই সময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়ে যাবে, কাজেই সেই সময় আমি যদি অনলাইনে নমিনেশনের ব্যবস্থাই রাখি আর এটা লাইভ না করলাম, চালু না করলাম, তাহলে তো করা না করা একই কথা।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আনিছুর রহমান বলেন, নভেম্বরে করব। এখন কখন সেটা বলতে পারব না। আর নভেম্বরে আমরা করব, এটা (অ্যাপস)। এখন যেই অবস্থায় আছে এটা খুব বেশি সময় লাগবে না।

তফসিল কি নভেম্বরেই হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যথা সময়ে হবে। অ্যাপস নভেম্বরে আমরা চালু করবই। নমিনেশন পেপার অনলাইনে জমা দেওয়ার এগুলো যদি আমরা চালু না করি তাহলে তফসিল কী করে হবে। ডিসেম্বরের তো আমরা যেতে পারব না। তফসিল তো নভেম্বরের আগেও করা যায় না। তাহলে ৪৫ দিনের বেশি সময় হয়ে যায়। কেননা, আমরা ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির প্রথমে নির্বাচন করব। সিইসি ইতিমধ্যে বলেছেন, নভেম্বরের যে কোনো সময় তফসিল হবে। আমরা সেটাই বলব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৩
ইইউডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।