ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ৪ নভেম্বর ফের দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য অন্যান্য নিবন্ধিত দলের পাশাপাশি বিএনপিকেও আলোচনায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১ নভেম্বর) ইসির জনসংযোগ পরিচালক বিএনপিকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন। এর আগেও সংলাপে বসার জন্য দলটিকে চিঠি দিয়েছিল ইসি। এছাড়া আলোচনায় বসতে স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ডিও লেটারও (আধাসরকারি পত্র) পাঠিয়েছেন। তবু দলটি ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। বরং ইসির পুনর্গঠন চেয়েছে তারা।
নির্বাচনের দোরগোড়ায় এসে যখন ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি, সে সময় বিএনপির দেওয়া কর্মসূচিতে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে সহিংস কর্মকাণ্ড। এতে বিভিন্ন মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে দলটির মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা।
বিএনপি মহাসচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদপূর্তির কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের মূল অংশীজন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্ব প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আগামী ০৪ নভেম্বর এক আলোচনা সভার অয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠানটি নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে [কক্ষ নং-৫২০, নির্বাচন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা] এ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আহ্বানকৃত ওই সভায় আপনার দলের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আপনাদের কর্তৃক মনোনীত দুই জন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ ২২টি দলকে সকালে এবং বিএনপিসহ ২২টি দলকে বিকেলে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে সময় দেওয়া হয়েছে সকাল সাড়ে ১০টায়, আর বিএনপিকে সময় দেওয়া হয়েছে বিকেলে ৩টায়।
বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আর নির্বাচনী সময় গণনার বিভিন্ন দাবিতে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি। এ নিয়ে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে জ্বালাও-পোড়াও। এ অবস্থায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকুক আর প্রতিকূলে থাকুক, তাদের হাতে কোনো অপশন নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তার কমিশন দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন যথাসময়ে হবে।
এদিকে সহিংস কর্মকাণ্ডের উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে কূটনৈতিক পাড়াতেও। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর সব পক্ষকে শর্তহীন সংলাপে বসে নির্বাচনে দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২৩
ইইউডি/আরআইএস