ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না: মাহবুব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না: মাহবুব নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংক্রান্ত আরপিও সংশোধনী নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে 'নোট অব ডিসেন্টের' ব্যাখ্যা করলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেছেন, ‘যন্ত্রের অগ্রগতির সময়ে আমি মোটেও ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে না। তবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না।’

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ভবনে বৈঠক বর্জন করার পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেন, আমি নোট অব ‍ডিসেন্ট দিয়েছি দু'টি কারণে।

আমাদের কমিশন শুরু থেকেই বলে আসছিল সব রাজনৈতিক দল না চাইলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। আমি আমাদের সংলাপের বই খুলে দেখলাম অধিকাংশ দল ইভিএম এর বিপক্ষে, তবে কিছু কিছু দল পক্ষে। কাজেই আমরা যে বক্তব্য রেখেছিলাম সেটা তো রাখতে পারছি না।

এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না। দ্বিতীয়ত ইভিএম ব্যবহারের জন্য যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে আমার বিচেনায় তা অপর্যাপ্ত। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে আমি খুবই সন্দিহান। এমনকি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন সে সময় আমাদের হাতে নেই। তাছাড়া ইভিএম ব্যবহারে ভোটারদের মধ্যে অনিহা আছে। এখন বলতে পারেন, আপনি জানলেন কিভাবে অনিহা আছে? আমি স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে অনিহা আছে। সেখানে দেখেছি অনেক ভোটার ইভিএম ব্যবহার করতে চাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ইভিএম ব্যবহারের আগে ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত ছিল। তাদের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত ছিল। আমাদের কমিশন থেকে যদি প্রথম থেকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতাম তাহলে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে ইভিএম ব্যবহার অনিবার্য হয়ে উঠতো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্মপরিকল্পনা পড়ে দেখলাম তাতে ইভিএম কোথাও ছিল না। তাহলে হঠাৎ করে নির্বাচনের আগে ইভিএম গুরুত্বপূর্ণ হল কেন। ভোটারদের অভ্যস্থ করতে না পারলে ইভিএম সফল হবে না। আমি যন্ত্রের অগ্রগতির সময়ে মোটেই ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে নই। তবে যে প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল সেই প্রস্তুতি আমাদের নেই।

সভা বর্জন করার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইভিএম সম্পর্কে আমার নিজের বিশ্বাস থেকে, বিবেক যেখানে সম্মতি দিয়েছে  সেটাই করেছি। আমি এমন কোনও কথা বলতে চাই না যে কথায় আমার সহকর্মীর বিপক্ষে যায়। একটা মতের বিরুদ্ধে আমার ভিন্নমত দিয়েছি। এটা কারো বিরুদ্ধে নয়। আমি চাই না, আগামী নির্বাচনের আগে মোটেই ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে আরপিও সংশোধন হোক।

'উনারা বসে বসে আরপিও সংশোধন করে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেবেন, আর আমি বসে থাকবো তাতো হয় না। আমার কাছে মনে হয়েছে উনারা উনাদের কাজ করুক, আর আমি আমার কাজ করি। তাই আমি বেরিয়ে গেছি।

আগামী নির্বাচনে যদি ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত পাস হয়ে যায় তখন কি করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তখন কি করবো তখনই বলব। আমার কাছে মনে হয় আগামী নির্বাচন এখনো অনেক দূর।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার মন চাইছে না অন্যের মতামতকে সেপোর্ট করতে হবে এ নীতিতে আমি বিশ্বাসী না। আমার সিদ্ধান্ত নিতান্তই ভিন্নমত, মতোবিরোধ নয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৮
এসএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।