সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর শের-ই বাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় নেতারা দোয়া ও মোনাজাত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচনী আইনে আছে দেওয়ালে পোস্টার লাগানো যাবে না এবং রঙিন পোস্টার লাগানো যাবে না।
এখন পর্যন্ত সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি দাবি করে মোশাররফ বলেন, আমরা আশা করি ঢাকাবাসী যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, নিজের হাতে দিতে পারেন, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে। আর আমাদের দাবি জনগণ নিজের হাতে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে ভোট দেবেন। আমরা ইভিএম মানি না, তাই ইভিএম বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করার জন্য ইসিকে আহবান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীরা আমাদের প্রচারাভিযানে বাধা দিচ্ছেন। হামলা করা হচ্ছে, কাউন্সিলরদের বাড়ি হামলা হচ্ছে। কাউন্সিলরদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। প্রচারের মাইক ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা যেহেতু মধ্যমপন্থি গণতান্ত্রিক দল, আমরা জানি সরকার ও তাদের পদলেহী নির্বাচন কমিশন কখনোই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না। তবুও আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য নির্বাচন করছি। গণতান্ত্রিক পরিবেশ যদি বজায় না থাকে তাহলে সেটা সফল হবে না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, জনগণ যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়মুক্তভাবে ভোট দিতে পারে তাহলে আমাদের উভয় মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবে। সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন, দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ ঢাকাকে বিষাক্ত নগরতে পরিণত করেছে। সেজন্য জনগণ আমাদের প্রার্থীদের ভোট দিতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। ঢাকাবাসীর কাছে আহবান জানাচ্ছি, আমরা জানি আপনারা এ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ, আপনারা পরিবর্তন চান। সেই পরিবর্তনের স্বার্থে আপনারা কেন্দ্রে এসে ভোট দেবেন। যত ষড়যন্ত্র থাকুক না কেন, যত রকমের বাধা থাকুক না কেন, তা উপেক্ষা করে দয়া করে ভোটকেন্দ্রে এসে পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবেন। জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে ভোট দেবেন। এ সরকারের হাত থেকে দেশের মানুষ ও ঢাকাবাসীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের দুই প্রার্থীকে ধানের শীষে ভোট দেবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, আমরা এ ধরনের হামলা বিগত দিনেও দেখেছি। জাতীয় নির্বাচনসহ বিগত দিনে যত নির্বাচন হয়েছে সব সময় দেখেছি। আমাদের নেতাদের হামলা করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এসব মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণ সিটি করপোরশনের (ডিএসসিসি) প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন। সেখানে তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এরপরে উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ফার্মগেট আলরাজি হাসপাতাল, তেজকুনিপাড়া, রেলওয়ে মার্কেট, বিজ্ঞান কলেজ, কাওরান বাজার, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড, সাতরাস্তা, বেগুনবাড়ি, নাবিস্কো ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ শুরু করেন।
এদিকে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন টিকাটুলি, অভয়দাস লেনের দিকে গণসংযোগ শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ জানুয়ারি ১৩, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস/