রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকেল সোয়া ৪টা থেকে থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা ভারত, ফান্স, তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০ দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের ওপর হামলা, হয়রানি, মামলা ও গ্রেপ্তারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়।
বৈঠক শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে, সার্বিক প্রেক্ষাপট, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। ভোট তো হচ্ছে, সেখানে অধিকার থাকবে, সেখানে ভোট হবে এবং ভোটের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হবে সেখানে ভোট হবে-এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘সরকারি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাস্তার ফুটপাতে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, মাইক ব্যবহার সময়-অসময়ে ইত্যাদি কাজ করে যাচ্ছে। এগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিগোচরও হচ্ছে না, আগামী ২৮ জানুয়ারি যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তার আলোচ্যসূচিতেও নেই। ’
তিনি বলেন, এরকম অবস্থায় নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না, সেখানে নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা কোথায় থেকে আসবে?
‘নানা ধরনের বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করে একপক্ষকে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে এবং আরেক পক্ষ সব আইনভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ’
ঢাকার উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দেয়ার বিষয়টিও কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা খসরু।
ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের বিষয়টি কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (কূটনীতিকরা) প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশের মানুষ। তারা কেউ কিন্তু ইভিএম ব্যবহার করছে না। কারণ ইভিএম ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে যে, প্রোগ্রামিংটা যারা করবে তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে তাই রেজাল্ট হবে-এটা পরিষ্কার।
‘বিশ্বের উন্নত দেশের বেশির ভাগে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। দুই-চারটা দেশে যারা ব্যবহার করছে সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ সারাজীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছে কোনো সমস্যা নাই। সেখানে ৪ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম এনে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার যে প্রক্রিয়া এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ’
এই বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জেবা খান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মীর হেলাল প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
এমএইচ/এমএ