ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২১
ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী!

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সেই সোহেল (৩৩) এবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের মেম্বার পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউপির বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।



বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সোহেল গোপনে মনোনয়ন দাখিল করলেও শনিবার (২৭ নভেম্বর) বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাপা ক্ষোপ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে কেন্দ্র দখল করে নির্বাচনে জয় লাভের ছক কষছেন সোহেল।

জানা গেছে, আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়া গ্রামের একটি পরিবার সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিষয়টি পুরো উপজেলায় ওপেন সিক্রেট। এই পরিবারটি উপজেলায় প্রথম মাদক ব্যবসার প্রচারপ্রসার করে। পরিবারের কোনো সদস্য গ্রেফতার হলে অন্য সদস্যরা এই ব্যবসার হাল ধরেন। এর কারণে বন্ধ হচ্ছে না মাদক বিক্রি। এবার নির্বাচনে মেম্বার পদে জয়ী হয়ে পুরোদমে ব্যবসায় আধিপত্য ছড়াতে ও বাধাহীনভাবে ব্যবসা করতে চাইছেন তারা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ বাবা,মা, ভাই, ভগ্নিপতি সবাই মাদক বিক্রেতা। গ্রেফতার হয় আবার ছাড়াও পায়। ওদের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী কারো হাত রয়েছে। এমন অভিযোগ ঘুরছে বালিয়াপাড়া গ্রামের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে। ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের একটি সুপরিচিত গ্রাম বালিয়াপাড়া। এই গ্রামের নামটি কলঙ্কিত করে ফেলেছে ওই একটি মাদক পরিবার। তাদের পরিবারের সদস্য নির্বাচনে নামায় এবার আতঙ্ক আর ভয় ছড়িয়েছে গ্রামজুড়ে।

সোহেল এবার এ ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী! ইতোমধ্যে অন্য প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখানো ও তাদের মাঠ ছেড়ে দিতে হুমকি চলছে। সোহেলের নামে রয়েছে ৮টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে একটিতে ওয়ারেন্ট।

সোহেল কারাগারে গেলে তার বাবা এলাকার বিখ্যাত মাদক সম্রাট মকবুল মিয়া (৫২) ব্যবসার হাল ধরেন। তার নামেও মামলা রয়েছে দুটি। তাদের সহযোগিতা সাহায্য করে স্ত্রী সোনাবিবি অথাৎ সোহেলের মা (৪০)। তার নামে মামলা ৯টি। সোনাবিবি গাঁজা, হেরোইন ও ফেনসিডিলসহ সব ধরনের মাদক মজুদ করে লুকিয়ে মাদক বিক্রি করেন। সোহেলের মা এলাকায় ‘মাদকের রানি’ নামে সবাই চিনে। এর আগে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারিংও করে সোহেল। এহেন অবস্থায় এ পরিবারের সদস্য যখন নির্বাচনের মাঠে তখন পুরো গ্রামে আওয়াজ উঠেছে যেন এমন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয় অন্যাথায় পুরো গ্রাম মাদকের নরকের রাজ্য পরিণত করবে এরা।  

আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সুলতানা এলিন বাংলানিউজকে জানান, সোহেল নামে একজন প্রার্থী হয়েছেন। তবে, তিনি মাদক বিক্রেতা হলে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।

বিষয়টি জানতে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সোহেল নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন কিনা জানা নেই। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।  

জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।