ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ: সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ: সিইসি

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ। ওই উচ্চতায় আমরা নই।

নির্বাচন ভবনের লেকভিউ চত্বরে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

পাঁচ বছরের দায়িত্বকালে নূরুল হুদা কমিশনের সফলতা-ব্যর্থতা সম্পর্কে জানতে জানতে চাওয়া হলে সিইসি বলেন, শতভাগ সাফল্য কেউ কোনোদিন অর্জন করতে পারে না। আমরাও পারি নাই।

তিনি বলেন, আইনের আলোকে পরিপূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করেছি। কোনো কোনো ব্যত্যয় হয়েছে। কোথাও কোথাও আমরা অনিয়ম হয়েছে, অনেক ভোটার নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন। এখন নির্বাচন বন্ধ আছে। টাইম ছিল না বলে করতে পারি নাই। সেগুলো অবশ্যই ব্যর্থতা। সুতরাং সেন্ট পার্সেন্ট সফল হওয়া, এটাতো মাননীয় কমিশনার রফিক সাহেব বলেছেন, আমরা তো ওই উচ্চতায় যাই নাই। উনি বলেছেন যে একমাত্র আল্লাহ-মাবুদের ক্ষমতা থাকে, আমরা তো মানুষ।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, একটা ভুল পারসেপশন আছে সমাজ ও গণমাধ্যমে। অনেকে বলতে থাকেন, ইসির অসীম ক্ষমতা। আকাশের দিকে তাকিয়ে বলি, এদের কী আল্লাহ-ভগবান নেই। তাদেরই তো কেবল অসীম ক্ষমতা।

সংবিধান ও আইনের দ্বারা পরিচালিত হবো এইটুকুই ছিল আমাদের শপথ। তাহলে আল্লাহর আসনে বসিয়ে দেওয়া কী অন্যায় নয়? অসীম ক্ষমতা কারো নাই।

কেএম নূরুল হুদা আরও বলেন, আমাদের ভুল হবে, আমাদের ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নেবো। তবে একটা জিনিস আপানারা হয়তো বিশ্বাস করবেন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অতন্ত গুরুত্বসহকারে দেখেছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। সেগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে, কেন দেরি হলো (ভোটগ্রহণ ধীরগতি), কেন আঙুলের ছাপ মেলে না। এসব নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছি। তারা কাজ করছে। গণমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচন বন্ধ করেছি। পেপার কার্টিংয়ের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় আনার চেষ্টা করেছি। তাদের সঙ্গে সংলাপ করেছি। যারাই দেখা করতে চেয়েছেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সবার সঙ্গেই দেখা করেছি। এখন তারা টিভিতে কথা বলেন, তাতে তো মনে হয় আস্থা অর্জন করতে পারিনি।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটের দিন গণমাধ্যম প্রচার করে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার বাড়ছে। শীত উপেক্ষা করে ভোটারের দীর্ঘ লাইন। আবার টিভিতে, মঞ্চে গিয়ে উল্টোটা বলেন। নির্বাচনে ৭০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। প্রায় ৭ কোটি ভোটার ভোট দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন। জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নিজ দফতরে বসে থাকলেও বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেননি। দুপুরে তিনি পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন করোনায় আক্রান্ত থাকায় যোগ দিতে পারেননি।

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক বেসামরিক আমলা কেএম নূরুল হুদাকে সিইসি; মাহবুব তালকুদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও সামরিক আমলা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। সংবিধান অনুযায়ী, পাঁচ বছর দায়িত্ব শেষে তাদের মেয়াদ শেষ হলো ২০২২ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২
ইইউডি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।