ঢাকা: আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হলে নির্বাচনী বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ছাড় পাবেন বর্তমান মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আগামী ১৫ জুন এ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির এই নেতা স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় তার জন্য সঙ্গত কারণেই কোনো ছাড় ছিল না। সেবার প্রথমবারের মতো কোনো সিটি করপোরেশ নির্বাচনে পুরোটাই ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সে সময় দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হলেও দলগুলো প্রার্থীদের সমর্থন দিতো।
জানা গেছে, সে সময় ইভিএমের বিরোধিতা করে নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। এই কারণে কুমিল্লা জেলা বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাক্কু। এবং স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফজল খানকে হারিয়ে প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি দলীয় পদে ফের বহাল হন।
বর্তমানে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে বিএনপি স্থানীয় কোনো নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে না। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনেও অংশ নেয়নি। তার ওপর দীর্ঘ ১০ বছর পর কুসিকে ফের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে।
২০১৭ সালের কুসিকের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনমুখী হয়। এমনকি সাক্কুকে বিএনপি ধানের শীষ প্রতীক দিলে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনজুম সুলতানাকে হারিয়ে ফের মেয়র নির্বাচিত হন। সে সময় প্রথবারের মতো দলীয়ভাবে এই সিটি নির্বাচন হয়।
গত ২৫ এপ্রিল তৃতীয়বারের মতো এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এই অবস্থায় সাক্কু সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেছেন, এবারও তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। তার দল মনোনয়ন না দিলে, বা নির্বাচন বর্জন করলে তিনি স্বতন্ত্র থেকেই প্রার্থী হবেন।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব এ বিষয়ে জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালার বিধি ১২ অনুযায়ী, স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হতে হলে ৩০০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর ও তথ্যাদি জমা দিতে হয়। সেখান থেকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে পাঁচজন সমর্থকের সত্যতা যাচাই করা হয়। আর এই প্রক্রিয়ায় অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ইতোপূর্বে বাতিল হয়েছে।
আর মেয়র সাক্কু যদি কোনো দলের মনোনয়ন না পান, তবে তাঁকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে না। কেননা, তিনি মেয়র হিসেবে পূর্বে নির্বাচিত হয়েছেন।
বিধি ১২-তে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মেয়র পদে ইতোপূর্বে নির্বাচিত হয়ে থাকলে তার জন্য ৩০০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর ও তথ্যাদির তালিকা দাখিল করার প্রয়োজন হবে না।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ মে ও মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ২০-২২ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ২৩-২৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৭ মে।
২০১১ সালে দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে গঠন করা হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নামে নতুন একটি করপোরেশন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে ওই বছরই প্রথম নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এরপর ২০১৭ সালে এসে এ সিটির পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয় প্রায় তিনগুণ। কুমিল্লা সিটি করপোরেশ ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। সর্বশেষ নির্বাচনে এ সিটিতে ভোটার ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ