ঢাকা: নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করায় ফেঁসে যাচ্ছেন কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (২৫ জুলাই) নির্দেশনাটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে মহাপরিচালকে পাঠানো হয়েছে জানিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে—গত ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মাঝুখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাচনের পর ওই ভোটকেন্দ্রের ৮নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোশারফ হোসেন প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল বহাল রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর আবেদন দাখিল করেন। ওই আবেদনের বিষয়ে তদন্ত করা হলে তদন্ত প্রতিবেদনে ৮নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মাঝুখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভোটকেন্দ্রে ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল দেন বলে তদন্ত কমিটির কাছে প্রমাণিত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে মাঝুখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভোটকেন্দ্রে ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের উপরোক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৫ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে দ্রুত সময়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।
যা আছে নির্বাচন কর্মকর্তা আইনে:
৫। (১) কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে প্রদত্ত কমিশন বা ক্ষেত্রমত রিটার্নিং অফিসারের কোনো আদেশ বা নির্দেশ পালনে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থ হইলে বা অস্বীকৃতি প্রকাশ করিলে বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আইনের বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করিলে বা উহার অধীন কোনো অপরাধ করিলে তিনি অসদাচরণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অসদাচরণ তাহার চাকুরিবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলিয়া বিবেচিত হইবে।
(২) কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অসদাচরণ করিলে তাহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাহাকে চাকুরি হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করিতে পারিবে বা বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারিবে বা তাহার পদাবনতি করিতে পারিবে বা তাহার পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি অনধিক দুই বত্সরের জন্য স্থগিত রাখিতে পারিবে: তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ কোনো শাস্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ব্যর্থতা, অস্বীকৃতি, লঙ্ঘন বা অপরাধের জন্য অন্য কোনো আইনে নির্ধারিত কোনো দণ্ড প্রদান বা উহার জন্য কোনো আইনগত কার্যধারা গ্রহণ ব্যাহত বা বারিত করিবে না।
(৩) কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তা উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অসদাচরণ করিলে কমিশন বা ক্ষেত্রমত কমিশনের সম্মতিক্রমে রিটার্নিং অফিসার তাহাকে, তাহার বিরুদ্ধে তজ্জন্য তাহার চাকুরিবিধি অনুযায়ী শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণ সাপেক্ষে, অনধিক দুই মাসের জন্য সাময়িকভাবে চাকুরী হইতে বরখাস্তের আদেশ দিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ বরখাস্তের আদেশ তাহার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাহার চাকুরীবিধি অনুযায়ী প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুযায়ী ইহা কার্যকর হইবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অসদাচরণের জন্য কোনো নির্বাচন-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক কার্যধারা গ্রহণের জন্য কোনো নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে কমিশন বা ক্ষেত্রমত রিটার্নিং অফিসার অনুরোধ করিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ অনুরোধ প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে উক্তরূপ কার্যধারা গ্রহণ করিবে এবং তত্সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করিবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ