ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা 

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২২
ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা  মো. ফারুক হোসেন ও শাহাদৎ হোসেন

ফরিদপুর: দীর্ঘদিন পর জমজমাট ও লড়াকুভাবে সোমবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফরিদপুর জেলা পরিষদের নির্বাচন।  

নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে  সোমবার বিকেল নাগাদ জানা যাবে ‘কে বসছেন ফরিদপুর জেলা পরিষদের মসনদে?” বিগত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় জেলা পরিষদের নির্বাচনের আঁচ পায়নি জেলাবাসী। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে জেলাবাসীর মধ্যে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী থাকলেও মূলত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ফারুক হোসেন (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাদৎ হোসেনের (চশমা) মধ্যে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আলোচনা উঠেছে।  

অন্যদিকে, মো. নুর ইসলাম সিকদার মোটরসাইকেল নিয়ে উক্ত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ডে সদস্য পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন।  

সারা দেশের ৬০টি জেলা পরিষদের মতো ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। ইভিএমের মাধ্যমে জেলার নয়টি উপজেলা পরিষদে নয়টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ১১৮৭ জন।  

জানা গেছে, এ নির্বাচন ঘিরে জেলায় তৈরি হয়েছে ভিন্ন রকম আমেজ। শুরুতেই আলোচনার ঝড় ওঠে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী প্রার্থী দিচ্ছেন এবং এই নেতা নিজেই প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেনের নাম ঘোষাণা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান। চষে বেড়ান জেলার নয়টি উপজেলা। ভোটারদের কাছে ভোটের দাবিতে ঘুরে বেড়ান।  

এদিকে ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফারুক হোসেনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে রোববার (১৬ অক্টোবর) ফরিদপুরে বিশেষ সফরে আসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি বিশেষ টিম।  

এদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুইজন প্রেসিডিয়াম মেম্বার জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।  

রোববার দুপুরে ফরিদপুর শহরতলীর ব্র্যাক লার্নিং স্কুলের হলরুমে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতো বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আরিফ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এ কে আজদসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অন্যান্য নেতাদের উপস্থিত ছিলেন।  

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের আগমন উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে অনেকটা কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ।  

এ ব্যাপারে নির্বাচনের সংশ্লিষ্ট ভোটারসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে খুবই শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. ফারুক হোসেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী ফারুক হোসেনের বিজয় এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মনে করা হচ্ছে।  

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান তাঁর নিজ এলাকা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট ভোটার ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত মিটিং করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এ কে আজাদ নির্বাচনের শুরু থেকেই ফারুক হোসেনের পক্ষে মাঠে নেমে কাজ করছেন।  

এরই মধ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে ফারুক হোসেনকে আনারস প্রতীকে বিজয়ী করতে জেলা যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল ও সদস্য নিয়াজ জামান সজিব উপস্থিত ছিলেন।  

যুবলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ওই সভা থেকে ফারুক হোসেনের জন্য কাজ করার নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভিন্ন অবস্থান নিলে বেছে বেছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের উদ্যোগে শুরুতেই বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত জনপ্রতিধিদের নিয়ে সভা করা হয়েছে।  
এদিকে, পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর ও নারী সদস্যরা। তারাও ভোটের আশায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনে যুবলীগের দুই নেতা কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না, দুজনেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।  

যুবলীগের সাবেক এই প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে স্নেহ করে এই পদের জন্য মনোনীত করেছেন। ১৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে বিজয়ী করতে দলের সব স্তরের নেতারা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আমরা বিজয়ী হতে পারলে এই ফরিদপুর জেলা পরিষদকে সারা দেশের মধ্যে একটি মডেল হিসেবে গড়ে তুলবো- ইনশাআল্লাহ।

অন্যদিকে, স্বতন্ত্রী প্রার্থী মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমার কারণেই এবার ভোটাররা ভোট দিতে পারছে। এ কারণেই ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবে এবং আমি জয়যুক্ত হবো।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।