ঢাকা: চলতি বর্ষা মৌসুমে ঢাকা চিড়িয়াখানায় বেশ কিছু প্রাণী রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশই এসব রোগের কারণ বলে জানা গেছে।
মাংসাশী প্রাণীর মধ্যে বর্ষাকালে বাঘ, সিংহ, ভাল্লুকের মধ্যে ফুটরট, ম্যাগট ও কৃমি রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। এছাড়া তৃণভোজী প্রাণীর মধ্যে হরিণ, হাতি, বেবুন, সাদা ও কালো হনুমান, চিত্রা হরিণ, বানর, উল্লুক, জিরাফের মধ্যেও এসব রোগের প্রবণতা চোখে পড়ে।
পাশাপাশি ম্যাকাউ, ইমু, ময়ূর, কেশোয়ারি, উটপাখি, হাড়গিলা, সাদা বক, চন্দনা, টিয়া, মদনটাক, গেটার ফ্লেমিং ও কালো গলার বক পাখির মধ্যেও বর্ষাকালে ফুটরট রোগ দেখা দেয়। ফুটরট রোগ হলে আক্রান্ত প্রাণিদের পায়ের পাতা ও তালুতে ঘা দেখা দেয়।
বড় আকারের তৃণভোজী ও মাংসাশী প্রাণীর পায়ের পাতায় ঘা ও সামান্য ক্ষত থেকে ম্যাগট রোগ দেখা দিতে পারে। দুর্ঘটনাবশত সৃষ্ট ক্ষতে মাছির আনাগোনা থেকে ক্ষত বড় আকার ধারণ করলে একে সাধারণত ম্যাগট রোগ বলা হয়ে থাকে।
চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথির জন্য বাড়তি নিরাপত্তা
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র ঢাকা চিড়িয়াখানায় দু’মাস আগে একটি জিরাফ বাচ্চা দিয়েছে। বর্ষাকালে জন্ম নেওয়া ওই জিরাফ শাবককে ফুটরট, ম্যাগট ও কৃমির আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা চিড়িয়াখানায় থাকা অন্যতম দামি প্রাণী জিরাফ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রতিটি জিরাফ ঢাকা পর্যন্ত আনতে খরচ পড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। বাচ্চাসহ এখন ঢাকা চিড়িয়াখানায় জিরাফের সংখ্যা ৫টি।
সম্প্রতি ঢাকা চিড়িয়াখানায় ২৫টি অজগরের ডিম থেকে ২৪টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে। এছাড়া ১০০টি ময়ূরের ডিম থেকে ৯৩টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে। এসব বাচ্চাগুলোকেও শুকনো পরিবেশে রাখা হয়েছে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা.এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে মাংসাশী ও তৃণভোজী প্রাণীরা ফুটরট, ম্যাগট ও কৃমি রোগে আক্রান্ত হয়। ঢাকা চিড়িয়াখানায় কিছু কিছু প্রাণীর মধ্যেও এসব রোগ দেখা দিয়েছে। তাদের জন্য আমরা বাড়তি চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছি। এসব রোগের প্রতিষেধকও ব্যবহার করছি। কৃমি ধ্বংসের জন্য আমরা নিয়মিতভাবে বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে খাবার স্যালাইন দিয়ে থাকি। ‘
ঢাকা চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি হাসপাতালেও এসব রোগে আক্রান্ত প্রাণীদের বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভেটেরিনারি সার্জন ডা.নাজমুল হুদা বাংলানিউজকে বলেন,বর্ষাকালে প্রাণিকুল ফুটরট, ম্যাগট ও কৃমি রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। ম্যাগট নিরাময়ের জন্য ড্রেসিং পর এক ধরনের তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া ফুটরট নিরাময়ের জন্য ইনজেকশনের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কৃমি ধ্বংসের জন্য খাবারের সঙ্গে প্রাণীদের শরীরে কৃমিনাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৩
এমআইএস/সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর