ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সবচেয়ে অলস প্রাণীর গল্প

ইমরুল ইউসুফ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৩
সবচেয়ে অলস প্রাণীর গল্প

আমরা ঢিলে স্বভাবের মানুষকে পছন্দ করি না। কারণ তাদের দিয়ে বেশি কাজ করানো যায় না বা তাদের দিয়ে বেশি কাজ হয় না।

পাঁচ মিনিটের কাজ তারা করে আধা ঘণ্টা ধরে। এজন্য আমরা তাদের অলস মানুষ বলি।

কিন্তু শুধু মানুষ নয়। পৃথিবীতে অনেক প্রাণী আছে যারা খুবই অলস। একবারে যাবে বলে ‘নড়ে খায় না’। তেমনই অলস একটি প্রাণীর গল্প শোনাবো আজ।

খুবই অলস প্রকৃতির ওই প্রাণীটির নাম স্লথ। স্লথদের বেশি দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ার বন জঙ্গলে। এরা এতটাই অলস যে, আধা মিনিটের পথ যেতে আধা ঘণ্টা লাগিয়ে দেয়।
spencer-the-12
গাছের ডালে ঝুলে ঝুলে কাটিয়ে দেয় সারাজীবন। মাঝে মাঝে জেগে ওঠে। চিৎ হয়ে নিচের দিকে তাকায়। হাত বাড়িয়ে লতাপাতা খায়। খেয়েদেয়ে ঘাড় গুঁজে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।

স্লথ যে ডালে ঝুলে থাকে, সে ডালের পাতা ফুরিয়ে গেলে তাদের কী যে কষ্ট! বহু কষ্টে তারা গাছের অন্য ডালে যায়। ভুঁড়ি দুলিয়ে দুলিয়ে ধীর ধীরে অন্য ডালে যেতেই তারা পার করে দেয় এক ঘণ্টা।

স্লথের ঘুম খুবই কম। তবে একবার ঘুমালে সহজে জাগে না এরা। এজন্য ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে এদের মাথায় এক ধরনের শ্যাওলা গজায়। ফলে এদের শরীরের উপর সবুজ একটি আবরণ দেখা যায়।
গাছের কচি পাতা, কুড়ি, কচি ডাল, ফল খেয়ে বেঁচে থাকলেও কিছু কিছু প্রজাতির স্লথ ছোট ছোট পোকামাকড় এবং ছোট আকারের সরীসৃপও খায়। এরা লতা পাতা এবং কচি ডালপালা খেয়ে অভ্যস্ত, তবে এগুলো হজম করে শক্তি উৎপাদন করা অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। আর এসমস্ত তৃণ জাতীয় খাদ্য থেকে খুবই কম শক্তি পাওয়া যায়। তাই স্লথরা অত্যন্ত ধীরে নড়াচড়া ও চলাফেরা করে শক্তির অপচয় রোধ করে। একবার খাওয়ার পর হজম হতে প্রায় এক মাস লেগে যায়। এই পরিপাক প্রনালীর জন্য এদের পাকস্থলি শরীরের দুই তৃতীয়াংশ যায়গা দখল করে থাকে।

দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনভূমির বাইরে এরা বেঁচে থাকতে না পারলেও অভিযোজনের দিক দিয়ে এদের অনেক সফল প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এদের ছয়টি প্রজাতির মধ্যে কোনটিই খুব শিগগিরই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

স্লথ গতি বা ধীর গতি শব্দটি বোধহয় এ প্রাণী থেকেই এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৩
এএ/আরকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।