ঢাকা: ভয়াল ঝড় আবার সুন্দর হয় নাকি! ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের এ প্রকারটিকে নিকৃষ্ট অসুন্দর বলা হলেও সৃষ্টিশীল মানুষরা সবকিছুকেই শিল্প এবং সৌন্দর্যে রূপ দিতে পারেন।
ঝড় আঘাত হানার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে সবাই প্রাণ ভয়ে ছোটাছুটি করলেও তার তাৎক্ষণিক সৌন্দর্যটি কিছু মানুষের চোখে সত্যিই ধরা পড়ে।
ঠিক যেমনটি ধরা পড়লো যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষক মার্কো কোরেসেকের ক্যামেরায়।
টর্নেডো বা ঝড় উপদ্রুত অঞ্চল খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ক্যানসাস ও কলোরাডো অঞ্চলে দায়িত্ব পালনের সময় গড়ে প্রায় এক কিলোমিটারের নিরাপদ দূরত্বে থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে বেশ কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন তিনি।
কোনো ছবিতে দেখা যায়, ঝড় আঘাত হানার আগ মূহূর্তে রাস্তার গাড়ি ও গাছগুলোকে একেবারে ঢেকে ফেলেছে বিশালাকারের কালো মেঘখণ্ড। মনে হবে এক্ষুণি যেন মেঘের বুকে ঢাকা পড়ে যাবে রাস্তা, গাড়ি, গাছপালা এবং বাড়ি।
আবার কোনো ছবিতে দেখা যায়, এই বুঝি ঝড়ের শক্তি নিয়ে রাস্তার ওপর আঁচড়ে পড়লো প্রকাণ্ড মেঘখণ্ড। যেন চিত্রগ্রাহকের গাড়িকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে দূরের অজানা কোনো মাঠে!
মার্কোর তোলো কোনো ছবিতে দেখা যায়, ভর দুপুরেও সূর্যকে গিলে নিয়েছে ঝড়ের জন্য শক্তি সঞ্চয় করা কালো মেঘ। সূর্যের নিরীহ আত্মসমর্পণে পুরো অঞ্চলই যেন রূপ নিয়েছে ভুতুড়ে উদ্যানে।
আবার মার্কোর তোলা কোনো ছবি দেখে মেঘ সঞ্চালনকে সাদা হ্যাটের (মাথায় পরার বৃত্তাকারের ক্যাপ) সঙ্গে তুলনা করাটাও বোকামি হবে না। কারণ, ঝড় মেঘখণ্ডকে এমনভাবে রূপ ধারণে বাধ্য করেছে, যেন এক্ষুণি সাদা হ্যাটটি ঢেকে দেবে ভূখণ্ডের যোগাযোগ টাওয়ার, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ এবং সবুজ ঘাসগুলিকে।
দায়িত্বশীল অথচ সৃজনশীল কর্মকর্তা মার্কো কোরেসেক বলেন, ঝড় পর্যবেক্ষণ একটি ভয়ংকর কাজ। আরও ভয়ংকর কাজ সেটি আঘাত হানার মুহূর্তে ক্যামেরা ধরে রাখা। তবে আমি যথেষ্ট নিরাপদ দূরত্বে রেখে দায়িত্ব পালন করার এবং ছবি তোলার চেষ্টা করি।
ঝড়ের এই ভয়ংকর অথচ সুন্দর ছবিগুলো তুলে সেটার ভয়াবহতা মানুষকে বোঝানোর জন্যই তার এই সৃজনশীল কাজ বলে জানান মার্কো।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৩
এইচএ/এসআরএস