ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

এক চিলতে বারান্দায় ফুলের চারা হলে বড় ভালো হয়

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৮
এক চিলতে বারান্দায় ফুলের চারা হলে বড় ভালো হয় ছোট্ট সোনামণিকে কোলে নিয়ে ফুল পছন্দ করছেন বৃক্ষমেলায় আসা শাহজাহান আহমেদ। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ছোট্ট বাসার এক চিলতে বারান্দায় ফুলের চারা হলে বড় ভালো হয়। সারাদিন কাজ শেষে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরলে ফুলের গন্ধ মন ভালো করে দেয়। ছোট্ট সোনামণিকে কোলে নিয়ে তাইতো গন্ধ রয়েছে, এমন ফুলই খুঁজছিলেন বৃক্ষমেলায় আসা শাহজাহান আহমেদ।

সোমবার (০৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় বৃক্ষ মেলায় শাহজাহান আহমেদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। ফুলের চারা কিনতে আসা এ চাকরিজীবীর মতে, ফুলের এ গাছগুলো যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি সুন্দর এবং বাসাবাড়িতে পরিচয় দেয় রুচিবোধেরও।

এবার মেলা শুরুর প্রথম দিন থেকেই রয়েছে বৃক্ষপ্রেমীদের আনাগোনা। কেউ কিনছেন, কেউবা দেখছেন। অনেককে পরিচিত হতে দেখা গেছে নানা প্রজাতির নতুন গাছের সঙ্গে। তবে বৃক্ষমেলায় অধিকাংশ ক্রেতা আসছেন দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ফুলের গাছ খুঁজে নিতে।

লালমাটিয়া থেকে বৃক্ষমেলায় আসা নাজিয়া ফারহান জানান, তিনি খুঁজছেন নানান রকমের ফুলের চারা। তবে পছন্দের তালিকায় সবার আগে আছে রঙ্গনের নাম। তিন রঙের রঙ্গন ছাড়াও তিনি আরো কিনেছেন অঞ্জলিকা আর কাঠগোলাপের চারা। লালমাটিয়া থেকে বৃক্ষমেলায় আসা নাজিয়া ফারহান দেখছেন রঙ্গন ফুলের গাছ।  ছবি: শাকিল আহমেদ
মেলায় যোগ দেওয়া অর্ধ শতাধিক স্টলের বিক্রয়কর্মীরাও জানিয়েছেন, অন্য বৃক্ষের তুলনায় এবার তারা প্রাধান্য দিচ্ছেন ফুলের গাছকে। এ প্রসঙ্গে কৃষি উপকরণ নার্সারি স্টলের ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম বলেন, ঋতুর কথা মাথায় রেখে এবার আমরা ফুলের গাছ বেশি এনেছি। বর্ষা উপলক্ষে ক্রেতারাও ফুলের গাছ চান বেশি। তাই এবারের মেলায় ফুলের গাছই অন্য গাছের তুলনায় অত্যধিক।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, এবার মেলায় এসেছে তিনশ’র বেশি জাতের গোলাপ। দেশি জাতের জবার পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রঙের ২০ ধরনের থাই জবা। আছে হরেক জাতের ঝুমকোলতা আর অপরাজিতা। ফুলবিলাসীদের জন্য আছে পাঁচ জাতের রঙ্গনও। আর নিজের বাগানে এ ফুলগুলো পেতে চাইলে ফুলের জাতভেদে গুণতে হবে ১০০ থেকে ৮০০ টাকা।

এদিকে কাঠগোলাপের বড় গাছ মিলবে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। বিদেশি দুষ্প্রাপ্য ম্যান্ডাভিলার চারা কেনা যাবে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। ভারতীয় রাইবেলী কেনা যাবে আকার ও জাতভেদে ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা, আর মাধবীলতার চারা বাক্সে নিলে ২০০ টাকা, টবে ফুলসহ বড় গাছ নিলে ৪০০০ টাকা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফুলের গাছ দেখছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা।  ছবি: শাকিল আহমেদস্থলপদ্ম ও জলপদ্মের দেখাও মিলবে মেলায়। স্থলপদ্ম আড়াইশ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে মিললেও জলপাত্রসহ জলপদ্মের জন্য গুনতে হবে সাত থেকে আট হাজার টাকা।

মেলার বিভিন্ন স্টলে আছে আফ্রিকান টিউলিপের ছড়াছড়ি। বিক্রেতারা বিভিন্ন জাতের টিউলিপ চারার দাম হাঁকছেন দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা। মোচেন্ডা ও অ্যালামোন্ডার বিভিন্ন জাতের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। আছে লিপস্টিক নামের ফুলও। এ ফুলের চারার দাম পড়বে ২৫০ টাকা। অ্যারোমেটিক জুঁইয়ের দাম ৫০০ টাকা, আর চেরি ফুলের চারা মিলবে ৭০০ টাকায়।

ফুলের গাছ বিক্রি প্রসঙ্গে মেলায় কথা হয় গ্রিন বাংলা স্টলের বিক্রেতা আবদুল হায়াতের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন তো প্রায় সব মানুষই ছাদে বা বারান্দায় বাগান করছেন। আর ফুলের গাছগুলো খুব সহজেই যেমন মানিয়ে যায় এ ছোট্ট জায়গাগুলোতে, তেমনি বাড়িয়ে দেয় সৌন্দর্য। সেদিক থেকে রুচির পরিচয় দিতে ছাদে বা বারান্দায় বাগান করা মানুষগুলোই বেশি কিনছেন ফুলের গাছ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৮
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।