দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম পরিচালিত হলেও স্থানীয় বনবিভাগসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নীরব। এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি ওই সংস্থা।
পাখিশিকারিদের ফাঁদে আটকা পাখিগুলো খয়রালেজ-কাঠশালিক (Chestnut-tailed Starling)। এই পাখিগুলো দলীয়ভাবে উড্ডয়ন এবং একত্রে ভূমিতে বিচরণ করে বলে খুব সহজেই এরা একসঙ্গে মানুষের পাতা ফাঁদে আটকে যায়। কমলগঞ্জ উপজেলায় একশ্রেণীর প্রকৃতিধ্বংসকারী মানুষের লালসার শিকারে পরিণত হয়ে খয়রালেজ-কাঠশালিক পাখিগুলোর জীবন বর্তমানে বিপন্ন।
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়, কমলগঞ্জে জাল দিয়ে প্রতিদিন পাখি শিকারের ঘটনাটি ঘটেছে কুরমা বিট ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তিনটি অংশে। প্রথমটি হলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি-৪৬) ব্যাটালিয়ন কুরমা ক্যাম্প থেকে প্রায় ৫শ গজ দূরের বাঁশবাড়ি। আর দ্বিতীয়টি স্থানীয় বাঘাছড়া এলাকায় চা-বাগানের একটি বাংলোর পাশে ও কুরমা চা-বাগানের ফাঁড়ি বাগান কুরুঞ্জি এলাকার বিলে।
আরও জানা যায়, ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামে আজাদ মিয়া, আনসার বক্স, আজির উদ্দিন, নুরুল, নৌশাদ, আনিছুর, আজিবুর, আব্দুল্লাহ, শাবাজ, হান্নান নামের ব্যক্তিরা এই পাখি শিকারের সঙ্গে জড়িত। ওই ব্যক্তিরাই জাল দিয়ে প্রতিদিন পাখি শিকার করেন। পাখিগুলোকে ধরেই গলাকেটে ফেলা হয়। ২০টি গলাকাটা পাখির দাম ৩শ টাকা।
কমলগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ও পাখিপ্রেমী মেরাজ আলী বাংলানিউজকে বলেন, কুরমা বিটের কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন জাল দিয়ে শত শত পাখি নিধন চলছে। এর প্রতিবাদ করায় স্থানীয় পাখি শিকারিরা আমার ওপর ক্ষেপেছেন। আমি চাই, আমাদের এলাকার পাখি নিধন বন্ধ হোক। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসুক আমাদের এই প্রকৃতির সম্পদ রক্ষায়। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বন্যপ্রাণী আটক, পাচার বা হত্যার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। সু-নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পেলে আমরা এ সংক্রান্ত দমনের ব্যাপারে সচেষ্ট হবো।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশেকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, জাল দিয়ে পাখি শিকারের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, বন্যপ্রাণী বিভাগের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এ ব্যাপারে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
বিবিবি/এএটি