শনিবার (৭ ডিসেম্বর) পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) জানায়, বিশ্ব জুড়ে প্রায় সাতশ’ সামুদ্রিক এলাকা এখন অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগছে। ১৯৬০ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫টি।
আইইউসিএন সতর্ক করে জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের কারণে কমছে অক্সিজেন, যা সাগরের সব প্রাণী ও মাছ প্রজাতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
আইইউসিএন পরিচালিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন জানায়, বিশ্বজুড়ে ‘অ্যানোক্সিক ওয়াটার’ এর পরিমাণ চারগুণ বেড়েছে। অ্যানোক্সিক ওয়াটার হলো যে পানিতে একেবারেই দ্রবীভূত অক্সিজেন নেই, অর্থাৎ অক্সিজেন বিহীন পানি।
সংস্থাটির গ্লোবাল ম্যারিন অ্যান্ড পোলার প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মিনা এপস বলেন, বিশ্ব জুড়ে মহাসাগরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমেছে দুই শতাংশ। সংখ্যাটি কম মনে হলেও, এই স্বল্প পরিবর্তন থেকে অসংখ্য জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
অক্সিজেন স্বল্পতার প্রভাব পড়বে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি, বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীসহ সমগ্র জীববৈচিত্র্যে।
এছাড়া, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ২১০০ সালের মধ্যে মহাসাগরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমবে তিন থেকে চার শতাংশ। বেশিরভাগ অক্সিজেন স্বল্পতা ঘটবে মহাসাগরের পানির পৃষ্ঠ থেকে এক হাজার মিটার গভীর পর্যন্ত।
প্রতিবেদনটির তথ্য অনুযায়ী, মহাসাগরে অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে টুনা, মার্লিন, হাঙরসহ ঝুঁকিতে রয়েছে অনেক প্রজাতির মাছ। বিশেষ করে বড় আকারের মাছ, যাদের বেশি পরিমাণে অক্সিজেন লাগে, তারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
আইইউসিএনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক গ্রেথেল অ্যাগুইলার বলেন, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মহাসাগরের জীববৈচিত্র্য যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা এ প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে সামুদ্রিক জীবনযাত্রায় বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
এ সপ্তাহে বিশ্ব আবহগত সংস্থা জানায়, কার্বন ও গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ বাড়ায় মহাসাগরের পানিতে অম্লত্ব (এসিড) বেড়েছে ২৬ শতাংশ। এটিও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলছে।
এই মুহূর্তে স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৫। এপস বলেন, সেখানে বিশ্বের নীতি-নির্ধারকদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর ওপরই নির্ভর করবে মহাসাগরে জীববৈচিত্র্যের ভবিষ্যৎ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এফএম