এই বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম আমাদের সমাজের ওপর থেকে নিচ সব স্তরে শুরু হয়। তবে এক্ষেত্রে অজান্তেই কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় কাউকে কাউকে।
অধিক লাভের আশায় বিদেশি গাছ বাছাই করে তা রোপন করে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করেন অজান্তেই। এজন্য রোপনের ক্ষেত্রে দেশীয় প্রজাতি গাছ বাছাই করতে হবে বলেও জানান উদ্ভিদ গবেষকরা।
চলতি মৌসুমে সঠিক বৃক্ষ বাছাইয়ের বিষয়ে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এবং উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
তিনি বলেন, বৃক্ষের নানা ধরনের উপকারিতার কথা বলে কখনোই শেষ করা যাবে না। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বৃক্ষ আমাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সেবা দিয়ে আসছে। বর্তমানে আমাদের পরিবেশবিরোধী নানান ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে প্রকৃতি থেকে দেশীয় উপকারী বৃক্ষগুলো প্রায় হারিয়ে গেছে। আমরা একটু সচেতন হলেই প্রতিবছর বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সেইসব হারিয়ে যাওয়া বৃক্ষদের আবার ফিরিয়ে আনতে পারি।
তিনি আরও বলেন, বনের বাসস্থান যেহেতু বিপন্ন সেক্ষেত্রে আমরা বনজ বৃক্ষ লাগাতে পারি। সেগুলো হলো- গর্জন, তেলসুর, বাটনা, সিভিট, বৈলাম, চাপালিশ, ঢাকিজাম, পাকনা, ধারমারা, পিতরাজ, তুন, আওয়াল, চুন্দুল, কড়ই, চিকরাশি, তুন, শাল, রক্তন, বনাক, কদম, রাতা, বেলখই, টিলাজারুল, জগডুমুর, কালজাম প্রভৃতি গাছ লাগানো উচিত।
ওষুধি বৃক্ষের কথা উল্লেখ করে ড. জসীম বলেন, গাছের মধ্যে আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, অর্জুন, উদাল, নিম, উলট কম্বল, তেঁতুল, কুরচি, ছাতিম, সাজনা, পুদিনা, কালোমেঘ, বসাক, থানকুনি, মেন্দা, হৈমন্তী, উলট চণ্ডাল, শতমূলী, স্বর্পগন্ধা, অশ্বগন্ধা প্রভৃতি বেশি করে লাগানো উচিত।
সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবেশ দৃষ্টিনন্দন করার জন্য দেশীয় বড় আকৃতির বৃক্ষ লাগাতে পারি। এগুলো হলো-পলাশ, শিমুল, সোনালু, উদাল, জারুল, কুরচি, কাঞ্চন, ছাতিম, মাধবীলতা প্রভৃতি।
আর আমাদের দেশীয় ফলগুলো- কাউফল, লটকন, জাম্বুরা, ডেফল, জলপাই, বরই, ডুমুর, তাল, বঁইচি প্রভৃতি গাছ বেশি করে লাগানো দরকার। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি এখন আমাদের কাছে নেই বললেই চলে। আর রোপনে এই বৃক্ষগুলো বাছাই করা হলে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ ব্যবস্থা ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বলেও জানান উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২০
বিবিবি/এএটি