মৌলভীবাজার: চা-পান করতে গেলে বাগানে চা-গাছ রোপণের কোনো বিকল্প নেই-এ কথা বলাই বাহুল্য। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে চলমান শীত মৌসুমেই চায়ের রোপণ সুবিধা বেশি।
চা-বাগানগুলোতে এখন শুরু হয়েছে শীতকালীন চা-গাছ রোপণ। মূলত বর্ষাকালে চারা রোপণের নিয়ম থাকলেও সুবিধাদির কারণে শীতকালকেই চারা রোপণের সময় হিসেবে বেছে নেন বাগান কর্তৃপক্ষ।
মোটকথা, তিনটি সুবিধার জন্যই চা-বাগানের টি-প্লান্টাররা শীত মৌসুম বা পুরো শীত মৌসুমকে বেছে নেন। আর এর ফলেই চা-বাগানের বাড়তি ল্যান্ডএডভাটেইজ (ভূমির সুবিধা) পাওয়া যায় বলে জানান অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার।
মাথিউরা চা-বাগানের সিনিয়র টি-প্লান্টার (চা-ব্যবস্থাপক) ইবাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এখান আমাদের চা-বাগানে উইন্টার প্লান্টিং (শীতকালীন রোপণ) চলছে। শীতকালে চা-গাছ লাগালে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তখন শুধু পানি দিলেই হয়। শীতকালে আগাছা জন্মে না। পুরো শীতকালটা আগাছা মুক্ত থাকে।
‘বছরের অন্যান্য সময় অর্থাৎ জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বর্ষার সময়টাতে আমরা প্লান্টিং করি। তখন কিন্তু প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি বেশি হলে মাটির ওপরের অংশ ধুয়ে অন্যত্র নিয়ে যায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন করে রোপণ করা চারাগুলো মধ্যে ভূমির বিপর্যয় ঘটে। এছাড়াও তখন নবীন গাছের গোড়ায় আগাছা বেশি জন্মে’ বলে জানান তিনি। বর্ষাকাল থেকে শীতকালে চা-গাছ রোপণ গুরুত্বপূর্ণ এ কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, তখন টাকা ব্যয় কম হয়ে ইকোনমিকেলি (আর্থিক) লাভ হয়। বর্ষাকালে আগাছা নির্মূলের জন্য প্রচুর ওষুধ দিতে হয়।
চারা রোপণ প্রসঙ্গে চা-বাগানের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা জানান, এবার আমরা আমাদের চা-বাগানে ৭০ একর জায়গায় নতুন করে চারা লাগাবো। এটি আমাদের নিউ প্লান্টিং (নতুন করে রোপণ)। এই ৭০ একরে প্রায় ৪ লাখ ৪৯ হাজার চারা লাগানো হবে। যদি গাছের দিকে ভালো করে যত্ন নেওয়া যায় তবে রোপণের এক বছর পর থেকেই পাতা চয়ন (গাছ থেকে চা-পাতা তোলা) করা সম্ভব। তবে পাতার পরিপূর্ণতা আসতে প্রায় চার বছর সময় লেগে যায়।
শীতকালে চা-গাছ রোপণের সুবিধার কথা উল্লেখ করে ইবাদুল হক বলেন, তিন প্রকারের সুবিধা রয়েছে তাতে। এক. শীতকালে ম্যানপাওয়ার (জনবল/শ্রমিক) বেশি পাওয়া যায়। দুই. শীতকালে ভূমি ক্ষয় হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। আর তিন. চারা গাছের নিচে আগাছা বা জঙ্গল হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
বিবিবি/এএটি