হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলেছে নতুন অতিথির। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকায় বিপন্ন এই অতিথির নাম ‘রাম কুকুর’।
সম্প্রতি গবেষকদের ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে এ কুকুরটির অস্তিত্ব ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন।
সোমবার (২৮ জুন) তিনি এ তথ্য জানান। স্থানীয় অনেকে প্রাণীটির ডাক শোনেছেন বলেও জানা গেছে।
এর আগেও রাম কুকুরের অস্তিত্ব রয়েছে জানা গেলেও এবারই প্রথম সাতছড়িতে কুকুরটি হাটছে, এমন ছবি পাওয়া গেল। সংশ্লিষ্টদের ধারণা দেশের আরও কিছু স্থানে এদের অবস্থান আছে, তবে অল্প সংখ্যক।
রাম কুকুর (Cuon alpinus), এশীয় বুনো কুকুর, ভারতীয় বুনো কুকুর বা ঢোল কেনিডি (Canidae) পরিবারের অন্তর্গত এক প্রজাতির বন্য কুকুর। এদের আবাস দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। প্রজাতিটি Cuon (কুয়ন) গণভূক্ত একমাত্র জীবিত প্রজাতি। Canis (কেনিস) গণভূক্ত সদস্যদের তুলনায় এদের পেষণ দাঁতের সংখ্যা কম।
ক্রমান্বয়ে আবাসস্থল ধ্বংস, শিকার কমে যাওয়া, অন্যান্য শিকারী প্রাণীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা, নির্মূল প্রক্রিয়া, গৃহপালিত কুকুরবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপসহ বিভিন্ন কারণে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে। সেজন্য আইইউসিএন রাম কুকুরকে বিপন্ন বলে ঘোষণা করেছে
রামকুকুর সামাজিক প্রাণী। অনেকগুলো সদস্য মিলে প্রায় গোত্রের মতো বড় বড় দলে এরা বসবাস করে। শিকার ধরার সময় এসব দল আবার ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে যায়। মধ্যম আকারের তৃণভোজী প্রাণী এদের প্রধান খাদ্য। বহু সময় ধরে এরা শিকারকে তাড়া করে, আর শিকার এক সময় ক্লান্ত হয়ে গেলে দলবদ্ধভাবে ঘিরে ফেলে এবং শিকারের পেট চিরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। শিকার করা প্রাণী এদের ছানাদের আগে খেতে দেয়, পরে নিজেরা খায়, যেটা অন্যসব সামাজিক কেনিডদের চেয়ে ব্যতিক্রম। মানুষকে ভয় পেলেও এরা বন্য শুকর, বুনো মহিষ বা বাঘের মতো বড় বড় প্রাণী আক্রমণ করতে ভয় পায় না।
সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রামকুকুর ছাড়াও ২৪৩ হেক্টরের এ বনে সম্প্রতি দেশের বিপন্ন ও সংকটাপন্ন বেশ কয়েটি প্রাণীর দেখা মিলেছে। যা আমাদের অনুপ্রানিত করে। তবে সকলকে মিলেই এদের রক্ষা করতে হবে। বনের উপর অত্যাচার কমিয়ে বন্যপ্রাণীর অভাব বিচরণ ও খাদ্য শৃঙ্খলের সুযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২১
এসআরএস