বায়ো-সেনসরের মাধ্যমে আর্সেনিক পরীক্ষার অভিনব কৌশল বের করেছে জার্মান বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী আর্সেনিক কবলিত গ্রাম নোয়াপাড়াতে তারা এর সফল পরীক্ষাও চালিয়েছে।
ডয়েচে ভেলে অনলাইন এই খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়, বায়ো-সেনসরে আর্সেনিক পরীক্ষা সুলভ মূল্যে করা যায় এবং তা করা যায় বিষাক্ত কেমিকেল ছাড়াই। কারণ এটি ব্যাকটেরিয়া দিয়ে করা হয়। জিন পরিবর্তন করা এসব ব্যাকটেরিয়া আর্সেনিক শনাক্ত করতে গোয়েন্দার মতই কাজ করে!
‘হেলমহোলটস সেন্টার ফর এনভারনমেন্ট` নামে জার্মানির একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অণুজীববিজ্ঞানী কারোলা এন্ডেস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আর্সেনিককে সেল থেকে বের করে ফেলার জন্য ব্যাকটেরিয়াগুলি এক ধরনের কৌশলের আশ্রয় নেয়৷ কেননা আর্সেনিক ব্যাকটেরিয়ার জন্যও বিষাক্ত৷ ব্যাকটেরিয়ার এই কৌশলটা ব্যবহার করতে চান এখন গবেষকরা৷ লক্ষ্য করা গেছে, জিন পরিবর্তন করা ব্যাকটেরিয়ারা আর্সেনিকের সংস্পর্শে এলেই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷``
অণুজীববিজ্ঞানী এনডেস বায়ো সেনসরটি পরীক্ষা করে দেখছেন৷ কাঁচের গ্লাসে ফ্রোজেন ব্যাকটেরিয়াগুলিকে দেখা যায়৷ পানির নমুনা এতে ঢাললে এই বায়ো ডিটেকটিভগুলি জেগে উঠবে৷ ঘণ্টা দুয়েক পর লিউমিনোমিটার দিয়ে ব্যাকটেরিয়াগুলির ভেতরে জ্বলজ্বল করা আলোর শক্তি নির্ণয় করা হবে৷ আর এর মাধ্যমে আর্সেনিকের পরিমাণও নির্ণয় করা যাবে৷
তবে গবেষণাগারে নির্ভুল হলেও কার্যক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে আর্সেনিক পরীক্ষা করার সময় অনেক ক্ষেত্রে ভুল ফলাফল পাওয়া গেছে৷ গবেষকরা এর কারণটা ঠিক মতো বুঝতে পারছেন না৷ জীববিজ্ঞানী কারোলা এনডেস বলেন, ‘‘প্রখর সূর্যতাপ, বাতাসের আর্দ্রতা, পানিতে বিভিন্ন দ্রব্যের মিশ্রণ এই সব আর্সেনিকের পরীক্ষাকে প্রভাবিত করতে পারে৷ আর এসবই আমাদের খুঁজে বের করতে হবে৷``
তাদের মতে, বাংলাদেশের এক কোটি (১০ মিলিয়ন) টিউবওয়েলের মধ্যে মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশই পরীক্ষা করা হয়েছে৷ এজন্য সহজ ও সুলভ মূল্যের পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷
জার্মান গবেষক টিমের প্রধান অণুজীববিজ্ঞানী হাউকে হার্মস বলেন, বায়ো-সেনসর খাদ্যদ্রব্যে আর্সেনিকের উপস্থিতি নির্ণয় করতে পারে৷ এখনও কেউ জানে না, আর্সেনিক ক্ষেতের ধানকেও দূষিত করছে কিনা৷’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি এটা প্রমাণ করতে চাই যে, বায়ো-সেনসর রাসায়নিক পদ্ধতির চেয়ে ভালো৷ আমাদের স্বপ্ন, এই পদ্ধতির আরো উন্নতি হলে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নিরীক্ষার আর প্রয়োজন হবে না৷``
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১২
এআই/সম্পাদনা: আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর