ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৭

ফিচার

মাত্র ৩ জন কথা বলেন যে ভাষায়

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৩৪, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৮
মাত্র ৩ জন কথা বলেন যে ভাষায় মাত্র ৩ জন কথা বলেন যে ভাষায়

ঢাকা: সময়, ভৌগলিক অবস্থান, সংস্কৃতি প্রভৃতির উপর ভিত্তি করে বিশ্বে প্রচলিত প্রায় কয়েক হাজার ভাষা। সৃষ্টির শুরু থেকে মানবসভ্যতার পাশাপাশি ভাষারও বিবর্তন ঘটে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। বিবর্তনের নিয়মানুসারে এসব ভাষার অনেকগুলোই বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। তেমনি একটি ভাষার নাম ‘বাদেশি’। বর্তমানে এ ভাষা বলতে জানা মানুষের সংখ্যা মাত্র তিনজন। 

বাদেশি ভাষা ব্যাপকভাবে ব্যবহার হতো পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় পর্বতাঞ্চলে। কিন্তু বর্তমানে ভাষাটি বিলুপ্তির পথে।

পৃথিবীর প্রায় সব ভাষা সংক্রান্ত তথ্যের রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত ‘এথনলগ’ অনুযায়ী, বাদেশি ভাষায় কথা বলতে জানা মানুষেরা আরও তিন প্রজন্ম আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পাকিস্তানের বিশিগ্রাম উপত্যকায় বাস করেন তিনজন বৃদ্ধ, যারা এখনও এ ভাষায় কথা বলতে জানেন। তাদেরই একজন রহিম গুল।  

নিজের বয়সের সঠিক হিসাব জানা না থাকলেও দেখলে মনে হবে রহিম গুলের বয়স ৭০-এর কম না। তিনি বলেন, মাত্র এক প্রজন্ম আগেও তাদের গ্রামের প্রায় সবাই বাদেশি ভাষায় কথা বলতো। কিন্তু বিবাহসূত্রে আশপাশের গ্রাম থেকে অনেক নারী তাদের গ্রামে চলে আসে, যাদের ভাষা তরওয়ালি। আর এদের সন্তানরা মায়ের ভাষাটাই মুখে রপ্ত করতে থাকে। ফলে বাদেশি ভাষা বিলুপ্ত হতে থাকে।

বর্তমানে পশতু ভাষার আগ্রাসনে তরওয়ালি ভাষাই চাপের মুখে, ফলে বাদেশি চলে যায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।  

রহিম গুল বলেন, এখন আমাদের সন্তানেরা তওয়ালি ভাষায় কথা বলে। তাই আমাদের নিজেদের ভাষায় কথা চালাচালির কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যায় না।  

নিজের বয়সের হিসাবটা ভুলতে বসেছেন বৃদ্ধ সাইদ গুলও। তিনি জানান, এ গ্রামে তেমন কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। কাজের জন্য গ্রামের লোতেরা সোয়াট জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করে। আর এজন্য তাদের কথা বলতে হয় পশতুতে।  

ভাষাতত্ত্ববিদ সাগার জামান জানান, এ নিয়ে তিনি তিনবার ওই এলাকায় গিয়েছেন। কিন্তু এ ভাষায় কথা বলতে জানা আর কোনো মানুষ খুঁজে পাননি তিনি। এ ভাষার কিছু কিছু শব্দ ইঙ্গিত করে, ইন্দো-আর্য ভাষাগুলোরই কোনো উপভাষা থেকে এর উৎপত্তি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।