ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

মোহনবাগানকে হারিয়ে শীর্ষে বসুন্ধরা কিংস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
মোহনবাগানকে হারিয়ে শীর্ষে বসুন্ধরা কিংস

এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মোহনবাগানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মাঠে নামে বসুন্ধরা কিংস। শুরুতে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাড়িয়ে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।

এএফসি কাপের ‘ডি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করাই লক্ষ্য ছিল বসুন্ধরা কিংসের। সেই লক্ষ্য পূরন করেই মাঠ ছেড়েছে কোচ অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ঘরের মাঠে মোহনবাগানকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে তারা। দুই দলের পয়েন্ট সমান হলেও হেড টু হেডে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মোহনবাগান।  

ঘরের মাঠে শুরুতেই লিস্টল কোলাসোর গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। তবে ৪৩ মিনিটে মিগেল দামাসেনার গোলে ১-১ সমতা নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে বসুন্ধরা। ঘড়িতে সময় যতই বাড়ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ কিংস অ্যারেনায় ড্রয়ের শঙ্কা ততই বাড়ছিল। তবে ৮০ মিনিটে সমর্থকদের উল্লাসে মাতালেন কিংসের অধিনায়ক রবসন রবিনহো। তার গোলের সঙ্গে সঙ্গেই গগনবিদারী উল্লাসে মাতে উপস্থিত দর্শকরা।

শুরু থেকেই আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই বাংলার ফুটবল লড়াই উত্তাপ ছড়ালো সমান তালে। ম্যাচে বেশ কয়েকবারই দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ম্যাচে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করেছিল মোহনবাগান। পাঁচ মিনিটেই মানভিরের শট সাইড নেটে লাগে।  

৭ মিনিটে বসুন্ধরা কিংসের গোরক্ষক শ্রাবনের ভুলে বল পেয়ে যায় মোহনবাগান। তবে দলকে বিপদমুক্ত করেন বিশ্বনাথ ঘোষ। পরের মিনিটেই প্রতিআক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল কিংস। দোরিয়লতন গোমেসের শট আটকে দেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাথি। ১৩ মিনিটে কর্নার পায় বসুন্ধরা কিংস। কর্নার থেকে মিগেল দামাসেনার নেয়া ছোট পাসে বল পান রবসন রবিনহো। তার বাকানো শট পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।  

১৭ মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে বসুন্ধরা কিংস। শুভাশিষের বাড়িয়ে দেয়া বল পেয়ে যান জেসন কামিন্স। তার কাট ব্যাক ঝাপিয়ে পড়ে ফেরান শ্রাবন। ফিরতি বল পেয়ে যান ফাঁকায় থাকা লিস্টল কোলাসো। ডান পায়ের বুলেট গতির শটে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।

এরপর একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে মোহনবাগানকে চাপে রাখে কিংস। ম্যাচের ২০ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন দোরিয়েলতন। চার্লস দিদিয়ের বাড়ানো বল বক্সের ভেতর পেয়ে যান দোরিয়েলতন। তবে তার শট ক্রস বারের উপর দিয়ে চলে যায়।

৩১ মিনিটে দলীয় বোঝাপড়ায় দারুণ এক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল কিংস। দোরিয়েলতনের পাস থেকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল পান রাকিব। তার ক্রস থেকে বল পান মিগেল দামাসেনা। কিছুটা অপ্রস্তুত ছিলেন তিনি। গোলকিপারের উপর দিয়ে জাল খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান। তবে তা গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।  

৪৩ মিনিটে সমতায় ফেরে বসুন্ধরা কিংস। চার্লস দিদিয়েরের পাস থেকে বল পান মিগেল দামাসেনা। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দামাসের জোড়ালো শটে সমতায় ফেরে কিংস। ওড়িশ্যার বিপক্ষেও বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় পিছিয়ে পড়া দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান।  

বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়ায় বসুন্ধরা। শুরু থেকেই মোহনবাগানকে চেপে ধরে বসুন্ধরা। এরই ধারাবাহিকতায় ৫১ মিনিটে রবসন রবিনহোকে গোলবঞ্চিত করে বারপোস্ট। বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে নেয়া রবসনের শট ফার পোষ্টে লেগে ফিরে আসে।  

৬২ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন রাকিব। তবে তার শট সহজেই তালুবন্দী করেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক। ৬৮ মিনিটে মোহনবাগানের ফুটবলার সাহালের বাঁকানো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেণ কিংসের গোলরক্ষক শ্রাবন। ৭১ মিনিটে মোহনবাগানের জেসন কামিন্স বল জালে জড়ালেও আফ সাইডের বাঁশি বাজান। পরের মিনিটেই মিগেল দামাসেনা শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

ম্যাচের ৮০ মিনিটে রবসন রবিনহোর ম্যাজিকে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। আরও একবার প্রমান করলেন বড় ম্যাচের তারকা তিনি। চার্লস দিদিয়েরে পাস বক্সের ভেতর পেয়ে যান দরিয়েলতন। তিন ডিফেন্ডারকে ফাকি দিয়ে বল দেন দলের অধিনায়ক রবসনকে। ডান পায়ের প্লেসিং শটে দলকে এগিয়ে দেন এই ব্রাজিলিয়ান। আবারও দুই ব্রাজিলিয়ানের বোঝাপড়ায় রক্ষা পেল কিংস। ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলো কিংসরা। এএফসি কাপের পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ বেশ ভালোভাবেই টিকিয়ে রাখলো বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৩
এআর/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।