সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি আরামকোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে ফিফা। চুক্তির মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত।
ফিফার সঙ্গে এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে সৌদি আরবের প্রভাব আরও বেড়ে গেল। আন্তর্জাতিক খ্যাতি উন্নত করার জন্য সৌদি আরব ক্রীড়াঙ্গনে বড় বড় ইভেন্টগুলোতে বিনিয়োগ করছে, এমনটাই অভিযোগ সমালোচকদের। যে প্রক্রিয়াকে 'স্পোর্টসওয়াশিং' হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
ফিফা ছাড়াও ফর্মুলা ওয়ান ও ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির সঙ্গে স্পন্সরশিপ চুক্তি আছে আরামকোর। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদক কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিয়ে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, 'বিশ্বমানের ইভেন্টে বেশ সফলতার সঙ্গেই সহযোগিতা করে আসছে আরামকো। একইসঙ্গে তৃণমূল ক্ষেত্রে খেলাধুলার বিকাশ নিয়েও কাজ করছে তারা। '
আরামকোর সঙ্গে ফিফার চুক্তি নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শঙ্কা দেখছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এই আন্তার্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, 'টুর্নামেন্ট আয়োজনের বিষয়ে কোনো চুক্তি চূড়ান্ত করার আগে শোষণ, বৈষম্য ও নীপিড়ন থেকে মানুষকে রক্ষা করার ব্যাপারে সৌদি আরবের সঙ্গে বাধ্যতামূলক চুক্তি করার জন্য ফিফাকে আহ্বান জানাচ্ছে অ্যামনেস্টি। '
শুধু মানবাধিকার সংস্থাই নয়, এই চুক্তি নিয়ে সরব হচ্ছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। কারণ আরামকো জীবাশ্ম জ্বালানি প্রদান করে। তাই এই চুক্তি, জলবায়ু প্রভাব সম্পর্কে ফিফার নীতির সঙ্গে সাংঘার্ষিক। এমনিতে ২০৩০ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ছয় দেশের নাম ঘোষণা করে সমালোচনার মুখে পড়েছে ফিফা। কেননা এতে করে পরিবেশে কার্বনের মাত্রা বেড়ে যাবে।
যদিও ফিফা জানিয়েছে, পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করতে সবধরনের প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেবে তারা। এর আগে কাতার বিশ্বকাপে পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস হয়েছে জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কিন্তু সেই দাবিকে গত বছর মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে এক সুইস নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আরামকোর সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে ফুটবলকে জীবাশ্ম জ্বালানি মুক্ত রাখতে প্রচারণা চালোনো এক গোষ্ঠী জানায়, 'সৌদি আরামকো ও সৌদি রাষ্ট্র পৃথিবীকে জীবাশ্ম জ্বালানিতে আসক্ত রাখতে বদ্ধ পরিকর। তারা এখন তাদের দূষণকারী পণ্য বিক্রি করতে ও ভাবমূর্তি পরিষ্কার করতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মঞ্চ পেয়েছে। '
ফিফাকে চুক্তিভঙ্গের আহ্বান জানিয়ে তারা জানায়, 'খেলোয়াড় এবং ভক্তদের আরও ভালো কিছু প্রাপ্য। '
গ্রিনপিস নামক এক আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা জানায়, 'জলবায়ু ধ্বংস করা ব্যবসার পরিণতি থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিশ্বের শত শত কোটি মানুষের ভালোবাসার খেলাটিকে ব্যবহার করছে আরামকো। '
যদিও আরামকো জানায়, তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে জ্বালানি শিল্পে সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণকারীদের মধ্যে অন্যতম তারা।
এদিকে ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হতে একমাত্র দেশ হিসেবে ফিফাকে প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। চলতি বছরের শেষ দিকে আয়োজকের নাম ঘোষণা করবে ফিফা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
এএইচএস