আগামী ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়ন তুলেছেন মোট ৪ জন।
ফুটবলপাড়ায় অনেকেই জানতে চাচ্ছেন মিজানুর রহমান চোধুরী আসলে কে এবং বাফুফে নির্বাচন নিয়ে তার পরিকল্পনা আসলে কী? এসব বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। চলুন জেনে নেওয়া যাক আলোচিত এই ফুটবল সংগঠকের ব্যাপারে,
দিনাজপুর পৌরসভার ঈদগাহ বস্তি এলাকার বাসিন্দা এ এস এম মিজানুর রহমান চৌধুরী। ছোট থেকেই ফুটবল খেলার পাগল তিনি। ১৯৬৯ থেকে ক্রীড়াঙ্গনে পদচারণা তার। আন্তঃজেলা ও ডিভিশনাল পর্যায়ে ফুটবল ও অ্যাথলেটিকসে প্রতিযোগিতা করে জিতেছেন অনেক পুরস্কার। পেশায় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হলেও পাশাপাশি চালাতেন ফুটবল কার্যক্রম। একটা সময় সেই চাকরিও ছেড়েছেন তিনি। ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি ফুটবল কোচিংয়ে যাত্রা শুরু করেন। জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে অনেক ভালো মানের ফুটবলার তৈরির কারিগর তিনি। তার তত্ত্বাবধানে দশটি ব্যাচের ৯৫ জন ফুটবলার খেলেছেন দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে। বর্তমানে জাতীয় দলে থাকা হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস ও মজিবর রহমান জনি তার হাতেই গড়া ফুটবলার। জনি বর্তমানে খেলছেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে।
কেন এবার বাফুফেতে আসতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ফুটবলের সোনালী যুগে অনেক ভালো মানের খেলোয়াড় ছিল যারা অনেকেই আমার কাছে শিখেছে। ফুটবলের বাংলাদেশের তেমন কোনও অর্জন নেই সাফ চ্যাম্পিয়ন ছাড়া। অনেকদিন থেকে র্যাংকিংয়ে উন্নতি নেই খুব বেশি। তৃণমূল থেকে পরিচালনা পর্ষদ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে সেভাবে উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার আছে যাদেরকে বাছাই করে দলে নিলে ফুটবলের উন্নতি করবে। ফুটবল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। তাই দেশের ফুটবলের দায়িত্বে আসার জন্য চেষ্টা। '
কাউন্সিলর না হয়ে সরাসরি সভাপতি পদে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'একজন কাউন্সিলর হয়ে খুব বেশি পরিবর্তন করা যাবে না। প্রেসিডেন্ট হলে তো তার পরিধি বড় হয়। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। '
বড় নির্বাচনে সব সময় চাপ আসে, নিজের ওপর কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচন মানেই তো চাপের বিষয়টা থাকেই। আমার ক্ষেত্রে অনেকটা চাপ আছে। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে, কৌশল জানা আছে। আমি অটল থেকে নির্বাচনটা করতে চাই। '
নির্বাচন নিয়ে বেশ আশাবাদী মিজানুর রহমান বলেন, 'সবাই তো ভালো কিছুর জন্য আশা রাখে। কাউন্সিলররা যদি আমার মেধা, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে তাহলে অবশ্যই ভোট দেবেন। তারা সুযোগ দিলেই আমি ফুটবলের জন্য কিছু করতে পারবো। '
নির্বাচিত হলে কোন বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি নির্বাচিত হলে প্রথমে ফুটবলের বিভিন্ন কার্যক্রমগুলোকে ঢেলে সাজাতে চাই। ফুটবলার যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এক দিনে ৩০০ জনকে ডাকা হয়। এভাবে তো ভালো মানের ফুটবলার নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। সময় দিয়ে তৃণমূল থেকে ভালো মানের ফুটবলার খুঁজে নিয়ে আসতে হবে। কোয়ালিটি সম্পন্ন প্লেয়ারকে একটু দিকনির্দেশনা দিলে সে আরো ভালো করবে। বাংলাদেশ ফুটবলার উন্নতি ও ফুটবলারের মান উন্নয়ন করাই হবে আমার কাজ। '
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সকল প্রার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে নিজের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন মিজানুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
এমএইচএম