স্বপ্ন ছিল শিরোপার, ছিল আত্মবিশ্বাস। মাঠে পারফরম্যান্সেও কোনো কমতি রাখেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দল।
রেসকোর্স স্টেডিয়ামে ২-২ গোলে ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে জয় তুলে নেয় ভারত। এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় আসরে ফাইনালে পৌঁছেও ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ ঘটল বাংলাদেশের।
ম্যাচের শুরুতে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। মাত্র ৪ মিনিটেই ভারতের প্রথম গোল। বাঁ দিক থেকে গুনলাইবা ওয়াংখেইরাকপামের বাড়ানো বল ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিকভ্রষ্ট হয়ে চলে যায় গাংতের কাছে। তিনি ঠাণ্ডা মাথায় জাল খুঁজে নেন। তবে এই গোল বাংলাদেশের গতি কমাতে পারেনি। ২৫ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে গোল এনে দেন মোহাম্মদ মানিক। আজম খানের হেড পোস্টে লেগে ফিরলে, মানিক হেড করে বল পাঠান গোললাইনের ভেতরে। সাব্বির ছুঁয়ে বল জালে পাঠালেও গোলের কৃতিত্ব যায় মানিকের নামে।
গোল খেয়ে তেতে ওঠে ভারত। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় তারা। গোলরক্ষকের প্রতিহত করা বল পেয়ে যান আজলান শাহ, তার শট বাংলাদেশি ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে জালে ঢুকে পড়ে।
বিরতির পরেও ফিরে আসার লড়াই থেমে থাকেনি বাংলাদেশের। ৫১ মিনিটে ফয়সালের দূরপাল্লার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তারপরও ভারতকে চাপের মধ্যে রেখেই এগিয়ে যায় লাল-সবুজের দল। অবশেষে অতিরিক্ত সময়ে আসে কাঙ্ক্ষিত গোল। ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে সাব্বিরের থ্রো থেকে বক্সে জটলা, সেখান থেকে ইহসান হাবিবের নিখুঁত প্লেসিং শটে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শ্যুটআউটে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইকরামুল ইসলামের শট লাগে পোস্টে, আর আজম খানের শট ঠেকিয়ে দেন ভারতীয় গোলরক্ষক জ্যোতি বড়ুয়া। একমাত্র মানিক ছাড়া আর কেউ জাল খুঁজে পাননি। এদিকে ভারতের হয়ে গাংতে, কোরোউ মেইতি, ইন্দ্র রানা ও শুবম পুনিয়া পরপর গোল করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয়।
২০২২ সালে সেমিফাইনাল, ২০২৪ সালে ফাইনাল, আর এবার ২০২৫ সালের আরেকটি ফাইনালে ভারতের কাছেই হার। এই বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বারবারই ভারত যেন বাংলাদেশের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এবার লড়াইটা ছিল আরও সাহসী, আরও ছন্দময়। দুবার পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফেরা, দ্বিতীয়ার্ধে দাপট, শেষ মুহূর্তে সমতাসূচক গোল সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নের মতোই লড়েছে বাংলাদেশ।
এআর