ঢাকা: সুইসদের উড়িয়ে দিয়ে পরবর্তী রাউন্ডের টিকিট সহজেই নিশ্চিত করেছে ফরাসিরা। শুক্রবার মধ্যরাতে সালভেদরের অ্যারেনা ফন্তে নোভা স্টেডিয়ামে সুইজারল্যান্ডকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বেনজেমা-গিরোদদের ফ্রান্স।
দলের এ বিশাল জয়ে নিজের অর্জনের পাল্লা ভারি করেন করিম বেনজেমা। এছাড়া একটি করে গোল করেন অলিভার গিরোদ, ম্যাতুউদি, ম্যাথু ভ্যালবুয়েনা ও সিস্সিকো।
নকআউটে ওঠার লড়াইয়ে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত ১টায় মুখোমুখি হয় ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড। এ ম্যাচের আগে বিশ্বকাপে একবার দেখা হয় দল দু’টির। ফল ড্র।
এমন পরিসংখ্যান নিয়ে যখন দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় দল দু’টি তখন সবার ধারণা ছিল লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। কিন্তু খেলা জুড়ে ফরাসিদের কাছে সুইসদের অসহায় আত্মসমর্পণই চোখে পড়ে। পুরো খেলায় শুধু গোল বাঁচানোর চেষ্টাই করে সুইসরা।
এর আগে ৬৭ ও ৭৩ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের জালে আবারও জোড়া আঘাত করে ফ্রান্স। ৬৭ মিনিটে চতুর্থবারের মতো প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে বল জড়ান করিম বেনজেমা। এ গোল উদযাপনের কয়েক মিনিট পরই পঞ্চম গোল উদযাপন করে ফ্রান্স। খেলার ৭৩ মিনিটেই ৫-০ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
করিম বেনজেমার পর ৭৩ মিনিটে তারই দেওয়া পাসে পঞ্চমবারের মতো সুইসদের জালে বল জড়ান সিস্সিকো।
খেলার ৮১ ও ৮৭ মিনিটে ব্লিরিম জ্যামাইলি ও ঝাকা ফরাসিদের জালে বল জড়িয়ে শুধু ব্যবধানই কমান।
এর আগে ১৭ ও ১৮ মিনিটে সুইসদের জালে পরপর দুই বল জড়িয়েও ক্ষ্যান্ত হয়নি ফরাসিরা। চালিয়েছে একের পর এক আক্রমণ। আর তাতে প্রধমার্ধের ৪০ মিনিটেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ৩২ মিনিটে করিম বেনজেমা এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পেনাল্টি মিস না করলে ব্যবধার আরও বেশি হতে পারতো।
বেনজেমার বাড়িয়ে দেওয়া বল সুইস জালে জড়ান ৭৩ মিনিটে সিস্সিকো।
১৭ মিনিটে কর্নার থেকে করা গোলে দলকে প্রথমে এগিয়ে নেন অলিভার গিরোদ। এর এক মিনিটের মাথায় বেনজেমার বাড়িয়ে দেওয়া বলে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ম্যাতুউদি। ৪০ মিনিটে ফ্রান্সের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন ম্যাথু ভ্যালবুয়েনা।
তবে ৩২ মিনিটের মাথায় বেনমাজার করা পেনাল্টি শট ঝাঁপিড়ে পড়ে রুখে দেন সুইস গোলরক্ষক দিয়েগো বেনাগিলো। এর ফলে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পোনাল্টি আটকে দেন তিনি।
সাতাশ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে না পড়লে এক গোল শোধ করতে পারতো সুইসরা। ২৯ মিনিটে আরও একটি সুযোগ মিস করে সুইজারল্যান্ড।
পঁচিশ মিনিটে বেনজেমার শট আটকে দেন দিয়েগো বেনাগিলো। প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরও একটি গোল বঞ্চিত হন তিনি।
এর আগে খেলার ছয় মিনিটের মাথায় বেনজিমার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে শুরুতেই এগিয়ে যেতো ফ্রান্স। সাত মিনিটের মাথায় গিরোদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোখে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন সুইস স্টিভ ফন বার্গেন। তার স্থলে মাঠে নামেন ফিলিপে স্যান্ডিরস।
প্রধমার্ধের পুরোটাই ফরাসিদের কাছে সুইসদের আত্মসর্মপন করতে দেখা যায়। একের পর এক আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে পড়ে সুইসরা। পাল্টা আক্রমণে যাওয়া দূরের বিষয় ফরাসিদের আক্রমণ প্রতিহত করতে বেগ পেতে হয় সুইসদের।
শুক্রবারে এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বারের মতো মুখোমুখি হয়েছে ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে প্রথম দেখা হওয়া সে ম্যাচে গোল শূন্য থাকে।
সালভেদরের অ্যারেনা ফন্তে নোভা স্টেডিয়ামে দু’দলের এ লড়াইয়ে যারা জিতবে তাদের নকআউট পর্ব অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ, এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উভয়েই জয় তুলে নিয়েছে।
ফ্রান্স জয়ী হয় হন্ডুরাসের বিপক্ষে ৩-০ গোলে। আর সুইজারল্যান্ড ২-১ গোলে জয় তুলে নেয় ইকুয়েডরের বিপক্ষে।
দু’দলের ইতোমধ্যে চূড়ান্ত একাদশ ঘোষণা করা হয়েছে। দলের জয়ের লক্ষ্যে ফরাসিদের পক্ষে খেলছেন-অধিনায়ক ও গোলরক্ষক উগো লরি, করিমন বেনজেমা, ম্যাথু দেবুচি, ইভ্রা, রাফায়েল ভারান, সাখো, ইয়োহান কাবাই, ম্যাথু ভ্যালবুয়েনো, গিরোদ, ব্লেইজ ম্যাতুউদি ও সিসোকো।
সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন-দিদিয়ের দেশম।
আর সুইজারল্যান্ডের পক্ষে খেলছেন- দিয়েগো বেনাগিলো, স্টেফান লিচস্টেইনার, স্টিভ ফন বার্গেন, গোখান ইনলের (অধিনায়ক), সেফেরোভিচ, গ্রানিট জাকা, বেহরামি, রিকার্দো রদ্রিগেজ ও মেহমেদী।
সুইজারল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন- ওটমার হিজফেল্ড।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৪ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪