ঢাকা: শক্তিশালী ফ্রান্সের বিপক্ষে সমানতালে লড়ে যাচ্ছে নাইজেরিয়া। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণের জবাবে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছে আফ্রিকান সুপার ঈগলরাও।
খেলার ২ মিনিটের মাথায় প্রথম ফাউলে অভিযুক্ত হন নাইজেরিয়ার জন অভি মিকেল। এই ফাউলে ফ্রান্সের পক্ষে প্রথম ফ্রি-কিক করেন পল পোগবা।
৩ মিনিটের মাথায় ম্যাচের প্রথম কর্নার পায় নাইজেরিয়া, শট নেন লরেন্ট কোসিয়েনলি। এক মিনিট পর কর্নার পায় ফরাসিরাও। তাদের পক্ষে শট নেন অধিনায়ক জোসেফ যোবো।
এই শটে ডি-বক্সের মাঝ থেকে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে বল জড়াতে চেষ্টা করেন অলিভার গিরোদ। তবে তার এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
১০ মিনিটের মাথায় অজেনি ওনাজের পাসে ডি-বক্সের বাইরে থেকে প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন নাইজেরিয়ান ইমেনিকে। তবে তার এ শট ক্লিয়ার করে দেন ফরাসি ডিফেন্ডাররা।
১৫ মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় ফ্রান্স। এবারও শট নেন গিরোদ, তবে ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার ডান পায়ের এ চেষ্টাও ব্যর্থ।
১৯ মিনিটে দুর্দান্ত শটে ফরাসিদের জালে বল জড়িয়ে গোল উদযাপনে মেতে ওঠেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচের অন্যতম নায়ক আহমদ মুসা। তবে অন্যদিকে তার সতীর্থ ইমেনিকে অফসাইডের ফাঁদে ধরা পড়েন।
২২ মিনিটের মাথায় পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ম্যাথু ভ্যালবুয়েনার পাসে ডি-বক্সের মাঝ থেকে ডান পায়ে দুর্দান্ত শট নেন পল পোগবা। তবে দুরন্তভাবে বলটি আকড়ে পোগবাকে হতাশ করেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক ভিনসেন্তে ইনেয়িমা।
২৪ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি জাল লক্ষ্য করে শট নেন ওনাজি। তবে তার শট রুখে দেয় প্রতিপক্ষের ডিফেন্স।
ফ্রি-কিক থেকে পাওয়া বল নিয়ে ৩০ মিনিটের মাথায় আক্রমণে যায় নাইজেরিয়া। তবে পিটার ওদেমউইঙ্গির ডি-বক্সের মাঝখান থেকে নেওয়া জোরালো শট ফিরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ।
৩৩ মিনিটের মাথায় প্যাট্রিক ইভ্রার পাসে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের ডান পাশ থেকে শট নেন ম্যাথু দেবুচে। তবে তার এ শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৪ মিনিটে নাইজেরিয়ানদের জালে বল পাঠিয়ে গোল উদযাপনের চেষ্টা করেন পল পোগবা। তবে তার আগেই তার সতীর্থ জোহান কাবাই অফসাইডে ধরা পড়েন।
৪০ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের মাঝ থেকে ডান পায়ের শট নিলেও ফরাসি দেবুচের শট প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়।
৪৪ মিনিটের মাথায় নাইজেরিয়ান ইমেনিকের প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। একইসময়ে হ্যান্ডবলে অভিযুক্ত হন নাইজেরিয়ান ভিক্টর মোসেস।
প্রথমার্ধের প্রায় শেষ মুহূর্তে একটি ফ্রি-কি পেলেও তা থেকেও গোল আদায়ে ব্যর্থ হয় ফ্রান্স।
কোনো পক্ষই গোল না পেলেও ফরাসিদের আক্রমণের জবাবে নাইজেরিয়ানরাও পাল্টা আক্রমণ চালায়, তবে প্রথমার্ধ গোলশূন্য রেখেই মাঠ ছাড়ে দু’দল।
প্রথমার্ধে বল দখলে সমানে লড়েছে দুই দল। ফ্রান্সের ৫১ শতাংশের বিপরীতে নাইজেরিয়ানদের পায়ে বল ছিল ৪৯ শতাংশ সময়। নাইজেরিয়ান গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছে ৫টি। একটি চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছালেও ধরা পড়ে অফসাইডে, বাকিগুলো ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। অপরদিকে ফ্রান্স প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠানোর লক্ষ্যে শট নেয় ৬ বার। এর মধ্যে একবার ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক, বাকি ৬ বারই হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
শিরোপার অন্যতম দাবিদার ফ্রান্সের বিপক্ষে প্রায় পাঁচ বছর আগের সুখস্মৃতি নিয়ে নকআউটের লড়াইয়ে মাঠে খেলছে আফ্রিকান ‘সুপার ঈগল’রা।
সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ব্রাসিলিয়ার এস্তাদিও ন্যাসিওনাল স্টেডিয়ামে সেরা আটে ওঠার এ লড়াইয়ে নামে দু’দল।
‘ডু অর ডাই’ লড়াইয়ে শিরোপার দাবিদার ফরাসিদের পক্ষে মাঠে খেলছেন-লরিস (অধিনায়ক), দেবুচে, ইভ্রা, ভ্যারেনে, কাবাই, ভ্যালবুয়েনা, গিরোদ, করিম বেনজেমা, মাতুইদি, পোগবা ও কোসিয়েলনি।
অপরদিকে, সুপার ঈগলদের মধ্যে খেলছেন- ইনেয়িমা, যোবো (অধিনায়ক), অ্যামব্রোস, আহমদ মুসা, ওদেমউইঙ্গি, ইমেনিকে, মিকেল, মোসেস, অশ্বানিবা, ওনাজি ও ওমেরু।
ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক গেইগার।
এই ম্যাচের আগে দু‘দলের মাত্র একবার মুখোমুখি লড়াই হয়েছে। ২০০৯ সালের ২ জুনের সে লড়াইয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে নাইজেরিয়া। ফ্রান্সের সেইন্ট-ইটেইনেতে অনুষ্ঠিত ফিফার ওই প্রীতি ম্যাচে ১৯৯৮ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফরাসিদের ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় সুপার ঈগলরা।
সোমবারের এ লড়াইয়ে যারা জয়লাভ করবে তারা ৪ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনালে লড়বে আলজেরিয়া কিংবা জার্মানির বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৪