ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ সফর ১৪৪৬

ফুটবল

৩ ক্লাবের কোচ মাত্র একজন!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৭
৩ ক্লাবের কোচ মাত্র একজন! মোহাম্মদ আলমগীর-ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এখান থেকেই আগামীর মামুনুল-এমিলিরা বের হবেন। জার্সি গায়ে চাপিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। সেই জায়গাটি সিনিয়র ডিভিশন লিগ। তাই এই লিগের উপর বিশেষ নজর থাকে প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগের হর্তাকর্তাদের।

সেই সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগের তিনটি ক্লাবের দায়িত্বে আছেন মাত্র একজন কোচ! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি।

১২ ক্লাব নিয়ে শুরু হওয়া সাইফ পাওয়ারটেক সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগের তিনটি ক্লাবের কোচের ভূমিকায় আছেন মোহাম্মদ আলমগীর।

ফুটবল পাড়ায় এই নামটি বহুল পরিচিত। তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় তৈরিতে তার জুঁড়ি মেলা ভার।

বাফুফের অফিসিয়াল সূত্র বলছে, মোহাম্মদ আলমগীর তিনটি ক্লাব-ঢাকা ওয়ান্ডার্স, ঢাকা ইউনাইটেড এসসি ও সাধারণ বীমা ক্রীড়া সংস্থার কোচের দায়িত্বে আছেন।

এ বিষয় নিয়ে ভ্রুক্ষেপে নিচ্ছে না প্রথম বিভাগ কমিটি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘তিনি যদি চালিয়ে যেতে পারেন তাহলে কোন সমস্যা নাই। তাছাড়া দু’বছর পর হচ্ছে এই লিগ। তাই অনেক বিষয় বিবেচনায় রাখতে হয়। শিথীল করতে হয়। ’

যুদ্ধের পরপর জাতীয় দলের জার্সি পড়ে খেলা এই কোচের ভাষ্যমতে, দুটি ক্লাবের কোচের দায়িত্বে আছেন আলমগীর। একটি ঢাকা ওয়ান্ডারস ক্লাব ও আরেকটি হলো সাধারণ বীমা ক্রীড়া সংস্থা।

কোনও সমস্যা হয়না বা কীভাবে দুটি ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বাংলানিউজকে জানান, ‘না সমস্যা হয় না। কারণ সকালে একটা দলকে প্রাকটিস করাই বিকালে আরেকটির করাই। তাই সমস্যা হয়ও না। আর দুটি ক্লাবকেই আমার নেতৃত্বে এই সিনিয়র ডিভিশনে চান্স পাইয়েছি। তাই সে ক্লাবের কর্মকর্তারাও আমাকে ছাড়তে চাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই করতে হচ্ছে। ’ 

দুটি দলের ম্যাচ যখন মুখোমুখি হবে তখন কীভাবে কোচের ভূমিকায় থাকবেন? এই প্রশ্নের জবাবে তার সহজ সরল উত্তর, ‘দুই দলে আমার সহকারী কোচরা দায়িত্ব পালন করবেন। আমি উপরে বসে দুই দলের খেলা উপভোগ করবো। ’

জন্মসূত্রে কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা তিনি। ১৯৬৫ বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) চলে আসেন। ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী কলকাতায় থাকেন। এরপর খেলেছেন ভিক্টোরিয়ায়। তারপরের জীবন নিয়ে বললেন, ‘৬৬, ’৬৭,’৬৮-তে খেললাম ভিক্টোরিয়ায়। তারপর দিলকুশা। তখনকার শীর্ষ ফুটবলে কাটিয়েছি অনেকগুলো বছর। ’

এরপর জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ’৭৩ সালে যে বছর ফিফার সদস্যপদ পেল বাংলাদেশ, ওই বছর কুয়ালালামপুরে মারদেকা কাপামী জাতীয় দলে ডাক পাই। বিমানে ওঠার এক ঘণ্টা আগে আমি বাদ পড়ে যাই দল থেকে। কারণ যাওয়ার আগে কয়েকটি ক্লাব আমাকে বলেছিল আসার পর যোগ দিতে। আমি নাকোচ করে দেই তাই দলে সুযোগ পাইনি। পরের বছর ঢাকায় রাশিয়ার ডায়নামো ক্লাব এলো, আমি ছিলাম জাতীয় দলের সদস্য। ’

‘ওই সময় বাংলাদেশে ৯ জন প্রথমসারির লিংকম্যান ছিল। আমি তাদের একজন। জাতীয় দল গড়তে আমাদের সর্বশেষ ট্রায়াল হলো এখনকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। নান্নু (প্রয়াত), কায়কোবাদ, সলিমুল্লাহ, অমলেশ, আলীম, বাটু (প্রয়াত) আমিসহ আরও দুজন ছিলেন। শেষ ট্রায়ালে টিকলাম আমি, নান্নু আর কায়কোবাদ। ’-তিনি যোগ করেন।

তার হাত ধরেই উত্তর বারিধারা প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পায়। তার মতে, ‘২০০৪ সালে ক্লাবটা তৃতীয় বিভাগে প্রথম চ্যাম্পিয়ন। এরপর দ্বিতীয় বিভাগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আমার অধীনেই। প্রথম বিভাগে সুপার সিক্সে ওঠে। তখনো আমি কোচ। পেশাদার লিগের দ্বিতীয় স্তরে রানার্সআপ হয়ে প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসাও আমার কোচিংয়ে। ’

তৃণমূল থেকে বড় লিটন, গাউস, স্বপনসহ অনেক জাতীয় খেলোয়াড় দের পেয়েছে তার হাত ধরেই। ৭৩ বছর বয়সেও চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং পেশা। তাতে টাকা পান সামান্যই তবে ফুটবলেই নিজের সারাজীবন অতিবাহিত করতে চান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, ০৩ এপ্রিল, ২০১৭
জেএইচ/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।